ঢাকার প্রবেশমুখে ২৯ জুলাই বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির দিন আশুলিয়ায় বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিএনপির ছয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার বিএনপির তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সোমবার রাতে খুলনা, রংপুর, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও ঢাকায় অভিযান চালিয়ে দলটির আরও তিন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান দুপুরে তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানায়, পরিবহনে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের আগ মূহুর্তের ফুটেজ ও সিসিটিভি পর্যালোচনা করেই আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ঢাকা জেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সুরুজ্জামান, ধামরাই পৌর ছাত্রদলের সদস্য অপূর্ব চন্দ্র দাস, ঢাকা জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সাভার থানা যুবদলের সদস্য সুজন, ঢাকা জেলা বিএনপির সদস্য মুমিনুল ইসলাম ও ধামরাই থানা যুবদলের সদস্য রাজীব হোসেন।
আগুন দিয়ে বাস পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন বাসের মালিক ও চালক।
গাড়ির চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, “আমি ওই দিন গাড়িটা নিরিবিলি দিয়ে ঘুরিয়ে আনছিলাম। তখন গলির ভেতর থেকে ৬০ থেকে ৭০ জন পোলাপান ‘খালেদা জিয়ার কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’ স্লোগান দিয়ে আমার সামনে বাস ও ট্রাকে ভাংচুর করে। এরপর আমার বাসে গুন দিয়ে পালিয়ে যায়। ওই সময় আমি তাদের ভালোভাবে চিনতে পারিনি। পরে ফুটেজ দেখে চিনতে পারছি।”
বিকাশ পরিবহনের এমডি সোহরাব হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে গাড়ির যন্ত্রাংশ ও তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা পরিবহন ব্যবসায়ীরা এমনিতেই ক্ষতির মুখে আছি। অনেক মালিক গাড়ি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এই মুহূর্তে যার একটা গাড়ি জ্বলে, তার আর ক্ষমতা নেই সেটা ঠিক করার। তাই এরকম ঘটনা যেন আর কোনো মালিকের সঙ্গে না ঘটে।
‘এ ঘটনায় যারা জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘গত ২৯ জুলাই বিএনপির সারাদেশে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বিকেলে বিএনপির কিছু নাশকতাকারী আশুলিয়ার নিরিবিলি এলাকায় মহাসড়কে বিভিন্ন গাড়ি ভাংচুর করে। ওই সময় ককটেল ফুটিয়ে ও বাসে আগুন জালিয়ে দিয়ে বিশৃঙ্খলতার সৃষ্টি করে তারা।
‘এ ঘটনার পরদিন ক্ষতিগ্রস্ত বিকাশ বাসের চালক আনোয়ার হোসেন আশুলিয়ার থানা একটি মামলা করেন। পরবর্তীতে আশুলিয়া থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের একটি বিশেষ দল অভিযানে নামে।’
পুলিশ সুপার আরও জানান, জিজ্ঞাবাদে গ্রেপ্তার আসামিরা নাশকতার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।
নাশকতার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, সে বিষয়ে তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।