ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে নতুন রূপে সাইবার নিরাপত্তা আইন করছে সরকার। নতুন আইনে মানহানির মামলায় কারাদণ্ডের বিধান থাকছে না, থাকছে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকার জরিমানা। তবে জরিমানা অনাদায়ে তিন বা ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান আইনমন্ত্রী।
এদিন বহুল বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ পরিবর্তনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। পরিবর্তিত রূপে এটি ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ নামে কার্যকর হবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তিত হয়ে সাইবার নিরাপত্তা আইন হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মধ্যে যেসব ধারা ছিল, সেই ধারা রেখে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জনগণের সরকার। সেজন্য আমরা সেটাকে (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) যেসব ক্ষেত্রে মিসইউজ এবং অ্যাবিউজ (অপব্যবহার) হয়, আইনের মাধ্যমে সেগুলো বন্ধ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
‘এখানে বহু ধারা সংশোধন করা হয়েছে। এটার আজকে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল নয়, পরিবর্তন হচ্ছে।’
আইনমন্ত্রী জানান, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৯ ধারায় মানহানির বিচার করা হয়। ওই ধারা অনুসারে মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারের ক্ষেত্রে কারাদণ্ডের বিধান ছিল। নতুন আইনে কারাদণ্ডের বিধান বাতিল করা হয়েছে, তবে জরিমানার বিধান থাকছে। এটি সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা করা হয়েছে। অনাদায়ে তিন বা ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হবে।’
এ সাজা শুধু জরিমানা না দিতে পারলেই ভোগ করতে হবে বলে জানান তিনি।
২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তথ্যপ্রযুক্তির আইনের ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬-সহ মোট পাঁচটি ধারা বিলুপ্ত করে জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ পাস হয়।
গত ২৫ জুলাই সচিবালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমিন গিলমোরের সঙ্গে বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘ইউরাপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধির সঙ্গে আমাদের ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি তাকে বলেছি, আমরা অবশ্যই এ আইন সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী সেপ্টেম্বরেই এ সংশোধনী জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হবে। আশা করছি, পাস হবে।’