বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতের সাজা বহাল রেখে হাইকোর্টের রায় প্রকাশ করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে সোমবার ২৮১ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।
রায়ে আমান দম্পতির বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতের দেয়া দুটি ধারায় ১৩ বছরের সাজা বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। রায়ের কপি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে তাদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
লিখিত রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত রাজনীতিকদের দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন।
আদালত বলে, ‘রাজনীতিবিদ এমন হওয়া উচিত যে, তিনি থাকবেন সৎ, দুর্নীতিমুক্ত।’
আদালত আরও বলে, ‘অর্থ ও সম্পদ গড়তে দেশে অনেক বৈধ ব্যবসা রয়েছে। এ ছাড়াও অন্যান্য পেশার মাধ্যমেও অর্থ ও সম্পত্তি অর্জন করা যায়, কিন্তু অর্থ উপার্জনের রাজনীতি কোনো পথ হতে পারে না।’
২০০৭ সালের ৬ মার্চ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক।
মামলায় ১৯৯২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আমান দম্পতির বিরুদ্ধে ৯ কোটি ৯৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকার সম্পত্তি অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, আমান জ্ঞাত আয়ের বাইরে ৩ কোটি ৩১ লাখ ৭৫ হাজার ৯ টাকা এবং সাবেরা আমান ৬ কোটি ৬২ লাখ ৮৮ হাজার টাকার সম্পত্তি অর্জন করেন।
এ মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত আমানকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড এবং স্ত্রী সাবেরাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন তারা। ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট আপিল মঞ্জুর করে তাদের খালাস দেয়া হয়।
দুদক এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারি খালাসের রায় বাতিল করে হাইকোর্টে পুনঃশুনানির আদেশ দেয় আপিল বিভাগ।
এরপর এ মামলার পুনঃশুনানি নিয়ে গত ৩০ মে রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন। আর ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর পক্ষে ছিলেন আজমালুল হোসেন কেসি ও মো. সাইফুল্লাহ মামুন।