চুয়াডাঙ্গার দর্শনার কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড প্রথমবারের মতো প্রায় ৪৩৯ কোটি টাকার মদ বিক্রি করেছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ৮৫ বছরের পুরোনো প্রতিষ্ঠানটি এ যাবতকালের সর্বোচ্চ অঙ্কের বিক্রির রেকর্ড করেছে বলে জানিয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিদেশি মদ আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপের পর দেশি মদের চাহিদা বেড়েছে।
কেরুর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে প্রায় ৬০ লাখ প্রুফ লিটার মদ উৎপাদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি, যা বিক্রি হয় ৪৩৯ কোটি টাকায়। এটিই কোম্পানির ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিক্রির রেকর্ড।
এর মধ্যে শুধু ডিস্টিলারি বিভাগের লাভ হয়েছে ১৫২ কোটি টাকা। এ অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব খাতে ১৪৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা জমা দিয়েছে কেরু।
কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫৭ লাখ ৭৩ হাজার ১১ প্রুফ লিটার মদ বিক্রি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ৩ লাখ ২৫ হাজার প্রুফ লিটার বেশি। এ থেকে প্রতিষ্ঠানটি আয় করেছে প্রায় ৪৩৯ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, ‘কেরুর সফলতা ধরে রাখতে প্রধান কাঁচামাল আখের উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে বিদেশি মদের আমদানি নিয়ন্ত্রণ করায় কেরুর মদের চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুণ। সে চাহিদা পূরণে উৎপাদন বাড়ায় কেরু। এতে কেরুর উৎপাদিত মদ বিক্রি বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে মুনাফার পরিমাণ। সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মদ উৎপাদনের কাজ চলছে। এতে কয়েক গুণ বাড়বে উৎপাদন ক্ষমতা।
‘মদের পাশাপাশি ভিনেগার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সার, চিনি ও গুড়ের মতো অন্যান্য পণ্যও উৎপাদন করে কেরু।’
কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ঢাকা, চট্টগ্রাম ও চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায় তিনটি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। সারা দেশে ১৩টি ওয়্যারহাউস ও তিনটি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
এরই মধ্যে কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় নতুন দুটি বিক্রয়কেন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
কেরুর ডিস্টিলারি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক রাজিবুল হাসান জানান, বর্তমানে কেরুতে চিনি, ডিস্টিলারি, ফার্মাসিউটিক্যালস, বাণিজ্যিক খামার, আকন্দবাড়িয়া খামার (পরীক্ষামূলক) ও জৈব সার ইউনিট রয়েছে। এর মধ্যে শুধু ডিস্টিলারি ও জৈব সার ইউনিটই লাভজনক।
তিনি আরও বলেন, ‘কেরুতে রয়েছে ইয়েলো লেবেল মল্টেড হুইস্কি, গোল্ড রিবন জিন, ফাইন ব্র্যান্ডি, চেরি ব্র্যান্ডি, ইম্পেরিয়াল হুইস্কি, অরেঞ্জ কুরাকাও, জারিনা ভদকা, রোসা রাম ও ওল্ড রামের মতো মদের নয়টি ব্র্যান্ড।
‘সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মদ উৎপাদনের কাজ চলছে। মদের উৎপাদন বাড়াতে কেরুর ডিস্টিলারি বিভাগকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে করপোরেশন। এতে কয়েক গুণ বাড়বে উৎপাদন ক্ষমতা।’
অন্যান্য বছরে তুলনায় এবার প্রত্যাশার চেয়ে বেশি লাভ হয়েছে লোকসান গোনা কেরুতে।
দেশে অ্যালকোহলের চাহিদা মেটাতে বিয়ার তৈরির লক্ষ্যে কেরুতে দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপন করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার।