শিশুরা হাতের সামনে যা পায় তা-ই ওরা খেলা আর খাবার সামগ্রী মনে করে। তাই তো কোনো কিছু না ভেবেই হাতে নেয়া যেকোনো জিনিস নিজের মুখে পুরে দেয়। পয়সা, মার্বেলসহ নানা কিছুই গিলে ফেলার ঘটনা উঠে আসে গণমাধ্যমে। তেমনই এক ঘটনা ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াঁ।
দুই বছরের শিশু হাবিবের খাদ্যনালী কেটে ছিটকিনি বের করে আনা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই অস্ত্রোপচার করেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. মো. আবু সাঈদ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আখাউড়া উপজেলার শান্তিনগর গ্রামের জুয়েল মিয়ার দুই বছরের ছেলে হাবিব। বুধবার সকালে মা পাখি বেগম সন্তানকে বিছানায় রেখে ঘরের বাইরে যান। শিশুটি এ সময় জানালা ধরে খেলা করছিল। এক পর্যায়ে জানালার ছিটকিনি খুলে আসে ওর হাতে। অবুঝ শিশুটি তা মুখে পুরে গিলে ফেলে।
ছিটকিনি গিলে ফেলার পর শুরু হয় শিশুটির পেটব্যথা ও যন্ত্রণা। পরিবারের সদস্যরাও কিছু বুঝে উঠতে পারছিলেন না। এ অবস্থায় ওকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে নেয়া হয়। সেখানে এক্স-রে করে দেখা যায় খাদ্যনালীতে কিছু একটা আটকে আছে। সেখান থেকে দ্রুত নেয়া হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে পুনরায় এক্স-রে করে চিকিৎসকরা দেখতে পান খাদ্যনালীতে ছিটকিনির মতো কিছুটা রয়েছে। সেখানে দুদিন পর্যবেক্ষণে রেখে শুক্রবার খাদ্যনালী কেটে ছিটকিনিটি বের করে আনা হয়।
হাবিবের মা পাখি বেগম সাংবাদিকদের জানান, তার তিন ছেলে সন্তানের মধ্যে হাবিব কনিষ্ঠ। বুধবার সকালে নাস্তা করিয়ে বিছানায় রেখে কিছু সময়ের জন্য বাইরে যান তিনি। ফিরে এসে দেখেন তার শিশু সন্তানটি যন্ত্রণায় ছটফট করছে। মুখ দিয়ে রক্তও ঝরছে। পরে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান তারা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও হাবিবের অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক আবু সাঈদ জানান, এক্স-রে রিপোর্টে শিশুটির পেটের খাদ্যনালীতে ছিটকিনির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। মানুষের খাদ্যনালী সাধারণত ২০ ফুটের মতো লম্বা থাকে। অস্ত্রোপচারের সময় খাদ্যনালীর ভেতর থেকে খুঁজে বের করা হয়েছে ছিটকিনিটি।
তিনি জানান, শিশুটির খাদ্যনালী কেটে ছিটকিনিটি বের করা হয়েছে। তা কিছুদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। শিশুটিকে আরও দুদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। তবে সে এখন সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত।