নির্বাচন, ভোটাধিকার বা গণতন্ত্রের সমস্যা কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয় বরং এটি আন্তর্জাতিক বিষয় বলে মনে করেন সুজনের (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।
তিনি বলেন, ‘এই ভোটাধিকার আমাদের সংবিধান প্রদত্ত অধিকার। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন, সার্বজনীন মানবাধিকার এবং আমরা আন্তর্জাতিকভাবে অনেকগুলো চুক্তি স্বাক্ষর করেছি যার কারণে আমরা ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই যেকোনো রাষ্ট্রই আমাদেরকে দায়বদ্ধ করতে পারে। এটা কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ নয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সমস্যা।’
রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে শনিবার সুজন আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতার আহ্বানে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সুজনের সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি কোনো দলের পক্ষে বা বিপক্ষে নয়। আমাদের আজকের মানববন্ধন মানুষের পক্ষে আর তাদের ভোটাধিকারের পক্ষে। দলীয় সরকার বনাম তত্ত্বাবধায়ক সরকার এটা কিন্তু মূল ইস্যু নয়।
‘এটা যদি ইস্যু হয় তাহলে কোনো দিন সমাঝোতা হবে না। কারণ এখানে কাউকে না কাউকে ছাড় দিতে হবে। আমাদের মূল সমস্যা হলো, আমাদের ভোটাধিকার। এ দেশের মানুষ বহুদিন থেকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। ভোটাধিকারের সমস্যা দেখলে এখানে একটা সমঝোতা হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আমাদের কয়েকটি শর্ত পূরণ করা দরকার। একটি বিষয় হলো নির্বাচনী প্রক্রিয়াটা সুষ্ঠু এবং যথাযথ হতে হবে। নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যম এটি নিশ্চিত করবে। তাই তাদের নিরপেক্ষ আচরণ সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বশর্ত। নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যম যেন তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারে সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।
‘আরেকটা বিষয় হলো আমাদের নির্বাচনের মাঠ সমতল হতে হবে। এই মাঠ যদি খাড়া হয়ে কোনো দলের পক্ষে বা বিপক্ষে হয় তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু করা সম্ভব হবে না। ১৯৯৬ সালে আমরা যে রাজনৈতিক বন্দোবস্তে উপনীত হয়েছি সেটি ভেঙে যাওয়ার ফলে নির্বাচনী মাঠটা অসমতল হয়ে পড়েছে। তাই শুধু দলীয় সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার এর বাইরে এসে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে কীভাবে মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা যায় সেদিকে যদি আমরা নজর দেই তাহলে সমঝোতা সম্ভব।’
সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম বলেন, ‘সকল দলের প্রতি আমাদের আহ্বান, সস্তা স্লোগান বাদ দিয়ে আপনারা মূল সমস্যার দিকে নজর দিবেন। এরপর আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করবেন। আমাদের প্রত্যাশা, আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত এড়িয়ে দলগুলো যেন সমঝোতায় পৌঁছে।’