বরিশাল নগরীর দুটি ওয়ার্ডের প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা বর্ষা মৌসুমে স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতেও ডুবে যায়। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ত্রিশ গোডাউন, খ্রিস্টানপাড়া ও পাশের চর এবং ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়ানগর, পূর্ব রূপাতলী, পাকারমাথা ও ধান গবেষণা সড়কের চর আইচা খেয়াঘাট পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকা প্রতিদিন প্লাবিত হয় জোয়ারের পানিতে।
এসময় প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন ফুট পানির নিচে তলিয়ে থাকে সড়কগুলো। অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারের সময় পানি সড়ক ছাপিয়ে ঢুকে যায় বসতবাড়িতেও।
জোয়ারের সময় বাসাবাড়ি থেকে বের হতে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয় এখানকার মানুষের।
এ দুর্ভোগ নিরসনে গত ১৫ বছরেও মেয়র-কাউন্সিলরসহ জনপ্রতিনিধিরা কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকার ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয়রা জানান, বরিশাল নগরীর ত্রিশ গোডাউন থেকে জিয়ানগর হয়ে ধান গবেষণা সড়কের খেয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা পানিতে তলিয়ে থাকছে সবসময়। জোয়ারের পানি সরে গেলে এ এলাকার রাস্তার ক্ষত ফুটে ওঠে। এতে বালি-কাদায় একাকার সড়কে চলতে হয় এলাকার বাসিন্দাদের।
জলাবদ্ধতা থেকে নিস্তার পেতে নতুন মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
নগরীর খ্রিস্টানপাড়া সংলগ্ন বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘জোয়ার এলেই আমার বাড়ি তলিয়ে যায়। ১০ বছর ধরে এ দুর্ভোগ চলছে।’
জিয়ানগর এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল হক মিঞা বলেন, ‘আমাদের এলাকার কাউন্সিলররা কোনো প্রকল্প করে এখন পর্যন্ত সড়ক উচু বা সংস্কার করে জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ নেননি। এমনকি আদি সাগরদি খালটি পর্যন্ত খনন করা হয়নি দীর্ঘদিন। খালের দুই মাথায় স্লুইসগেট ও নদীতে বেড়িবাঁধ না করায় বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিন জোয়ারের পানিতে ডুবতে হয় আমাদের। আশা করি, নবনির্বাচিত মেয়র আমাদের শত শত পরিবারের এ সমস্যার সমাধান করবেন।’
এ বিষয়ে নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরিফ মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘জিয়ানগর ও খ্রিস্টানপাড়ার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ অনেক দিনের। নদীতীরে বেড়িবাঁধ ও খালের মুখে স্লুইসগেট না থাকায় জোয়ার এলেই কীর্তনখোলার পানিতে সড়ক ডুবে যায়। নতুন মেয়র দায়িত্ব নিলে এ সমস্যার সমাধানে কাজ করবেন বলে আশা করছি। এতে এলাকার ৬ থেকে ৭ হাজার মানুষের দুঃখ কমবে।’
বরিশাল নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন রয়েল বলেন, ‘প্রতি জোয়ারে হাঁটু সমান পানি ওঠে এলাকায়। প্রতিদিন এলাকার বাসিন্দাদের এ কষ্ট ভোগ করতে হয়। এ সমস্যার সমাধানে নদীর তীরে বেড়িবাঁধ, খালে স্লুইসগেট, সড়ক উঁচু করা এবং ড্রেন করে সাগরদি খালের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে।’
বরিশাল সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, ‘এখনো দায়িত্ব পাইনি। তারপরও নগরীর কোথায় কী সমস্যা রয়েছে তা পরিদর্শন করে দেখছি। এখানকার সমস্যা সমাধানে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।’