পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ার ও নিম্নচাপের কারণে ভারী বর্ষণে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের মেরেলগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রামসহ পৌরসভা এলাকায় গত তিন দিন ধরে এমন পরিস্থিতি চলছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকার সহস্রাধিক বাড়িঘরে পানি উঠে গেছে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
বাগেরহাটের ভৈরব নদীর তীরে থাকা হাড়িখালি ও মাঝিডাঙ্গা এলাকার অন্তত ৩০টি বসতঘর প্লাবিত হয়েছে জোয়ারের পানিতে। কারও কারও ঘরের মধ্যেও উঠে গেছে পানি।
এ ছাড়াও জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার নদীর তীরবর্তী ২৫ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা রাস্তা, বাড়িঘর, বেড়িবাঁধসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন হুমকির মুখে। শহর রক্ষা বাঁধসহ ঘষিয়াখালী পর্যন্ত নদীর দুপাড়ে স্থায়ী বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতিবছর এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।
পঞ্চকরণ ইউনিয়নের দেবরাজ এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ১ হাজার ২০০ মিটার অস্থায়ী বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে পানগুছি নদীর ভাঙ্গনের ফলে ফসলি জমি, বাড়িঘর গাছপালা বিলীন হয়ে নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার।
অপরদিকে মোরেলগঞ্জ শহরের ফল ব্যবসায়ী লাল মিয়া ও কাপড় ব্যবসায়ী ইব্রাহিম শেখ বলেন, দুপুর ১২টা বাজলেই পানির চাপ বেড়ে দোকানে ঢুকে পড়ে পানি। ৩ ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। গ্রাম থেকে আসা ক্রেতারা চলে যায় তড়িঘড়ি করে।
এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মনিরুল হক তালুকদার জানান, শুধু শহর রক্ষা বাঁধ নয়, ইতোমধ্যে গাবতলা হয়ে ঘষিয়াখালী পর্যন্ত স্থায়ী বেড়িবাঁধের ট্রেন্ডার হয়েছে। ২০১৭ সালে এ প্রকল্পের প্রস্তাবনা হয়েছে। বাস্তবায়নের অপেক্ষায় শহরবাসী। বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হলে এ সমস্যায় থাকবে না।
বাগেরহাট জেলা পানিউন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, মোরেলগঞ্জ শহর সংলগ্ন রামপাল-মোংলা হয়ে ঘষিয়াখালী পর্যন্ত ৯৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের জন্য সম্ভাব্যতা সমিক্ষার জন্য মন্ত্রানালয়ে প্রস্তাবনা রয়েছে। এ ছাড়াও ইতোমধ্যে পানগুছি নদীর ভাঙন হতে বাগেরহাট জেলা সদর সংলগ্ন এলাকা সংরক্ষণ এবং বিষখালী নদী পুনঃখনন শীর্ষক প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি কাজ শেষ হলে এ সমস্যা থাকবে না।