টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে আবারও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে ফের ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদীপাড়ের শতশত পরিবার।
পানি বৃদ্ধির কারণে প্রতিদিনই অসংখ্য বসত-ভিটা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। থাকার বসতভিটা হারিয়ে এখন একেবারেই ভালো নেই নদীপাড়ের ভাঙন-কবলিত পরিবারগুলো।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক মাস ধরে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার চিতুলিয়াপাড়া, পাটিতাপাড়া, ভালকুটিয়া, মাটিকাটা, কোনাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। এতে বিলীন হয় শতশত বসতবাড়ি। কিছুদিন পানি কমলেও ফের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে।
বুধবার দুপুরে উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের মাটিকাটা এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, ভাঙনে বসতভিটা নদী গর্ভে চলে যাওয়ার শঙ্কায় ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে ভাঙন-কবলিত মানুষ। এদের কেউ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিলেও কেউ আবার সড়কের পাশে আশ্রয় নিচ্ছে।
মাটিকাটা গ্রামের ভাঙনের শিকার ৯৬ বছর বয়সী হাসেম আলী মুন্সী বলেন, ‘যমুনার ভাঙনের শিকার হয়ে কয়েক বছর আগে কয়েক একর ফসলি জমি হারিয়েছি। ঘর সরিয়েছি অংখ্যবার। এখন রাস্তার পাশে রয়েছি। শেষ জায়গাটুকুও এখন গ্রাস করছে যমুনা নদী। সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছি আমরা নদীপাড়ের মানুষ।’
লাভলী বেগম বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ ধরে মাটিকাটা অংশে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বসতভিটার অর্ধেকের বেশি নদীগর্ভে চলে গেছে। আজকালের মধ্যে বাকিটুকুও ভেঙে যাবে। দুইদিন ধরে ঘর ও আসবাবপত্র সরাচ্ছি। এমন অবস্থায় ভাঙন না ঠেকালে মানবেতর জীবন কাটাতে হবে।’
নিকরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাসুদুল হক মাসুদ বলেন, ‘যমুনা নদীর ভাঙনের ফলে অসংখ্য বসতভিটা, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙনরোধে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। দুয়েকদিনের মধ্যে ভাঙনরোধে জিওব্যাগ ফেলা হবে।’
এবিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিমা বিনতে আখতার বলেন, ‘কিছুদিন আগে ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হয়। ফের নতুন করে ভাঙনের বিষয়টি আমার জানা নেই।
বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম। সরেজমিনে পরির্দশন করে ভাঙনরোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’