রেলের রানিং স্টাফদের মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা নিয়ে যে জটিলতা দেখা দিয়েছে তা আগামী ২৭ আগস্টের মধ্যে নিরসন না করলে পরদিন থেকে কর্মবিরতি করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান মঙ্গলবার বিষয়টি গণমাধ্যমে জানিয়েছেন।
কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিষয়টি নিয়ে জটিলতা করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আমাদের যেটা প্রাপ্য এবং যেটা আমরা অনেক আগে থেকে পেয়ে আসছি সেটা হুট করে বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা নানাভাবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলকে বলার চেষ্টা করেছি এবং জানিয়েছি। কিন্তু তারা আশানুরূপ কোনো ফল আমাদের দিতে পারেনি। তাই এবার আর কোনো কথা নেই, আগামী ২৮ তারিখ থেকে আমরা সোজাসুজি কর্মবিরতিতে চলে যাব।’
এদিকে সমিতির দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কর্মরত কর্মচারীদের অবসর-উত্তর ৭৫ শতাংশ মাইলেজ মূল বেতনের সঙ্গে যোগ করে পেনশন নির্ধারণের বিধান প্রায় ১৬০ বছর ধরে চলমান। কিন্তু ২০২০ সালে রেলওয়ের কোডিফাইড রুল অমান্য করে রানিং স্টাফদের পার্ট অফ পে হিসেবে গণ্য মাইলেজ, যা যুগ যুগ ধরে বেতন খাতের অংশ ছিল, সেখান থেকে সরিয়ে টিএ খাতে নেয়ার ফলে জটিলতা তৈরি হয়। এর পরে ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ রেলওয়ে রানিং স্টাফদের মাইলেজে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা প্রদানে আপত্তি জানায়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা রেলমন্ত্রী, রেলসচিবসহ রেল প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বহুবার বৈঠক করে আমাদের প্রাপ্যতার বিষয়ে আইনি ভিত্তি, যুক্তি তুলে ধরলে তারা আমাদের দাবির যৌক্তিকতা অনুধাবন করে অর্থ মন্ত্রণালয়কে বারবার চিঠি দেন এবং আমাদের প্রাপ্যতার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।
আরও বলা হয়, ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছর ১০ এপ্রিল রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে অর্থ মন্ত্রণালয় ১৩ এপ্রিল চিঠিটি প্রত্যাহার করে নেয়। পরে রেলমন্ত্রী ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে এই সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন, যা গত ১১ জুন রেলওয়ের মহাপরিচালক স্পষ্টীকরণ করে রানিং স্টাফদের মাইলেজে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদানের নির্দেশ দেন। কিন্তু আবারও গত ১৮ জুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে, ফলে সমগ্র রেলে রানিং স্টাফদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।