বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নির্বাচনকালীন স্বস্তির পর সিলেটে দ্বিগুণ লোডশেডিং

  • প্রতিবেদক, সিলেট   
  • ১ আগস্ট, ২০২৩ ২১:২৩

দিনের বেশিরভাগ সময় থাকছে না বিদ্যুৎ, গরম আর লোডশেডিংয়ে প্রাণ ওষ্ঠাগত সিলেটবাসীর।

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের জন্য কিছুদিন প্রায় লোডশেডিংমুক্ত ছিলো সিলেট। এতে স্বস্তিতে ছিল নগরবাসী। তবে নির্বাচন শেষ হওয়ার পর তাদের সেই স্বস্তিও উধাও। নির্বাচনের মাসখানেক আগে যে পরিমাণ লোডশেডিং ছিল, তারচেয়ে এখন দ্বিগুণ লোডশেডিং হচ্ছে বলে অভিযোগ নগরবাসীর।

এ বিষয়ে আক্ষেপ করে নগরের চালিবন্দর এলাকার বাসিন্দা আতাউর রহমান বলেন, ‘ভোটের সময় কয়েকটা দিন একটু শান্তিতে ছিলাম। লোডশেডিং তেমন ছিল না। এখন মনে হচ্ছে, সেই সময়ের বকেয়া লোডশেডিংও এখন পুষিয়ে নেয়া হচ্ছে।

‘ওই সময়ের স্বস্তির এখন প্রতিশোধ নিচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন অনেকে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে।’

নগরবাসীর অভিযোগ, দিনের বেশিরভাগ সময়ই এখানে বিদ্যুৎ থাকছে না। এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলে পরের দুই ঘণ্টা লোডশেডিং থাকছে। মধ্যরাতেও লোডশেডিং হচ্ছে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব কার্যক্রমই ব্যাহত হচ্ছে।

গত কয়েকদিন ধরেই ভ্যাপসা গরম পড়ছে সিলেটে। গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে লোডশেডিং বাড়ায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে নগরজীবন।

সিলেটের গ্রামাঞ্চলের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আরও করুণ। গ্রামের অনেক এলাকায় টানা ৪-৫ ঘণ্টাও লোডশেডিং হচ্ছে। কোনো কোনো এলাকায় পুরো রাত বিদ্যুৎ থাকছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের কারণে জুনের শুরু থেকে লোডশেডিংমুক্ত ছিলো সিলেট নগরী। দলীয় মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর উদ্যোগের কারণেই সিলেটে লোডশেডিং হচ্ছে না বলে তখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রচার করা হয়। নির্বাচনে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর মেয়র নির্বাচিত হন। তবে নির্বাচন শেষ হওয়ার পরদিন থেকেই সিলেটে শুরু হয় লোডশেডিং; দিন দিন তা বেড়েই চলেছে।

লোডশেডিংয়ের কারণে নগরের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। সরকারদলের অনেক নেতাও লেডশেডিং নিয়ে নিজেদের অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে।

এ নিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আলী কামাল সুমন ফেসবুকে লেখেন, ‘বিদ্যুতের যন্ত্রণা নিরসনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

চিকিৎসক আলিম আল রাজি লিখেন, ‘এই যে সিলেটের ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়, এই যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং, এটা নিয়ে কারও কোনো বক্তব্য নাই, ব্যাখা নাই, আশ্বাস নাই।’

নগরের মদিনা মার্কেট এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, ‘সারাদিনে ৫-৬ বার বিদ্যুৎ যায়। বিদ্যুতের অভাবে ব্যবসা লাটে উঠছে। ক্রেতারাও আসে না। এদিকে রাতে বাসায় এসে শান্তিতে ঘুমানোরও সুযোগ নেই, মধ্যরাতেই বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ ছাড়া এই গরমে ঘুমাবো কী করে?’

সিলেটের জকিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সুবীর দেব বলেন, ‘আমরা হঠাৎ হঠাৎ বিদ্যুতের দেখা পাই। দিনরাত মিলিয়ে ৪ ৫ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে না। মোবাইল চার্জ দেয়ারও সুযোগ মিলে না অনেকদিন। জীবন একেবারে দুবির্ষহ হয়ে উঠেছে।’

বিদ্যুতের অভাবে ব্যবসার দুরবস্থার কথা উল্লেখ করে নগরের জিন্দাবাজার এলাকার ব্লু ওয়াটার শপিং সিটির ব্যবস্থাপক মিঠু দত্ত বলেন, ‘কিছুক্ষণ পরপরই বিদ্যুৎ চলে যায়। টানা চালানোর ফলে জেনারেটরও বিকল হয়ে পড়ছে। মার্কেটের লিফট সবসময় সচল রাখা যাচ্ছে না। এতে মার্কেটে ক্রেতা কমে গেছে। অথচ জ্বালানি খরচ অনেক বেড়ে গেছে।’

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, সিলেটে সোমবার বিদুতের চাহিদা ছিল ৫৬০ মেগাওয়াট আর পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি সরবরাহ করে ৪৪০ মেগাওয়াট। ফলে ১২০ মেগাওয়াট লোডশেডিং দিতে হয়। তবে মঙ্গলবার সরবরাহ অনেকেটা বেড়েছে। মঙ্গলবার ৫৭৯ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ মিলেছে ৫০০ মেগাওয়াট।

তবে সরবরাহ বাড়লেও লোডশেডিং কমেনি বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।

এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদির বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) পরিস্থিতির একটু উন্নতি হয়েছে। তবে বাতাস ও সংস্কার কাজের কারণে কিছু এলাকায় বেশি লোডশেডিং হতে পারে।’

তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় নগর এলাকা লোডশেডিংমুক্ত রাখার নির্দেশনা থাকায় লোডশেডিং হয়নি। এখন সব এলাকায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে লোডশেডিং করা হচ্ছে। সরবরাহ কম থাকায় এমনটি হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর