আওয়ামী লীগ নিজেরা সন্ত্রাসী দল এবং দেশকেও সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ জন্মগতভাবেই একটি সন্ত্রাসী দল এবং এটাই তাদের একমাত্র পরিচয়।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে মঙ্গলবার দুপুরে কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানা বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশ পথগুলোতে ২৯ জুলাই বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ওপর হামলা ও তাকে লাঠিপেটার প্রতিবাদে এই সভার আয়োজন করা হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জন্ম থেকেই সন্ত্রাসী দল। প্রাদেশিক পরিষদের ডেপুটি স্পিকারকে পিটিয়ে মেরেছিল তারা।
‘আমরা যে দাবিতে আজ আন্দোলন করছি, সেই একই দাবিতে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ গানপাউডার দিয়ে ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল। লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে মানুষ মেরেছিল তারা। এই রাষ্ট্রকেও সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলেছে আওয়ামী লীগ।’
ডিবি কার্যালয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে খাওয়ানোর ছবি-ভিডিও প্রকাশের ঘটনা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের প্রমাণ বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার বিএনপির জনসমর্থন দেখে প্রচণ্ড ভয় পেয়ে পুরোপুরিভাবে অন্য পন্থায় চলে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগ শিষ্টাচার জানে না। আওয়ামী লীগে কোনোকালেই ভদ্রলোক ছিল না। তাদের কাছ থেকে ভদ্রতা আশা করাও ঠিক না।’
বিএনপি আগের জ্বালাও-পোড়াওয়ের চেহরায় ফিরে এসেছে- প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমিও আপনার সঙ্গে একমত, বিএনপি আগের চেহারায় ফিরে এসেছে। আর সেটা হচ্ছে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন। তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন।’
নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হোন। আমাদের এক কথা এক দাবি- শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। উত্তাল আন্দোলনের ঢেউয়ে এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।’
সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিজেদের প্রভু মনে করে। তারা মনে করে, এই দেশের মালিক আওয়ামী লীগ। জনগণকে দেশের মালিক মনে করে না।’
তিনি বলেন, ‘২৯ জুলাই বিএনপির সমাবেশে আওয়ামী লীগ আশা করেছিল একটি খুন-খারাবি হবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় নিজেদের সমাবেশে দুই গ্রুপ সংঘর্ষ করে পথচারী এক কোরআনের হাফেজকে হত্যা করেছে।’
প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির প্রান্তিক বিষয়ক সম্পাদক অপর্ণা রায়, ঢাকা জেলার সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, সাবেক সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু চৌধুরী প্রমুখ।