ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সোমবার পর্যন্ত চলমান বিশেষ মশা নিধন কার্যক্রম আরও একমাস বাড়িয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রাজধানীর দক্ষিণখানে কয়েকটি স্কুলে সোমবার সকালে শিক্ষার্থীদের মাঝে ‘মশার কামড় ক্ষতিকর’ শীর্ষক সচেতনতামূলক কার্টুন বই বিতরণকালে ডিএনসিসি মেয়র এ কথা বলেন।
মেয়র প্রথমে দক্ষিণখান মোল্লারটেক উদয়ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ও পরে দেওয়ানপাড়া মডেল স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতামূলক কার্টুন বই বিতরণ করেন। স্কুল দু’টির প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঝে ওই বই বিতরণ করা হয়।
বই পাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা একটি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। প্রতিযোগিতায় প্রত্যেক শ্রেণির প্রথম পাঁচজন শিক্ষার্থীকে পুরস্কার হিসেবে গাছের চারা ও বই উপহার দেন মেয়র।
এসময় মেয়র বলেন, ‘মশার বিরুদ্ধে আমরা আমাদের শিশুদের সুপার হিরো বানাতে চাই। শিশুরা যদি মশার বিষয়ে জানতে পারে ও কামড় থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারে, তবে অনেকাংশেই আমরা মশাবাহিত রোগ রুখতে পারব। আমাদের ছাপানো আর্ট বুকটির মাধ্যমে শিশুরা মশার প্রজননস্থল ও এর কামড়ের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানতে পারবে।
‘বইটি কাউন্সিলরদের মাধ্যমে ঢাকা উত্তরের সকল কিন্ডারগার্টেন ও প্রাইমারি স্কুলে পৌঁছে দেয়া হবে। এক লাখ বই বিতরণ শেষ হলে আমরা আরও পাঁচ লাখ বই ছাপিয়ে শিশুদের মাঝে বিতরণ করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে ডিএনসিসি তিন স্তরে কার্যক্রম শুরু করেছে। কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে নিজ এলাকার মসজিদের ইমাম, স্কুলের শিক্ষক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ে সভা করতে হবে। এ সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে সচেতনতামূলক সভা আয়োজন করা হবে।’
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘আমরা সিটি করপোরেশন থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। মশক নিধন কার্যক্রমের পাশাপাশি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযান আরও জোরদার করতে দশটি অঞ্চলের জন্য দশজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হচ্ছে।
‘আমরা দ্রুতই এডিসের লার্ভা ধ্বংসে কার্যকর বায়োলজিক্যাল কীটনাশক বিটিআই প্রয়োগ করব। আমাদের কাউন্সিলররা মাঠে আছেন। সবাইকে সম্পৃক্ত করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলেই ডেঙ্গু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।’
এসময় ট্রাকে উঠে এডিস মশার উৎসস্থল, যেমন: গাড়ির পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, মাটির পাত্র, খাবারের প্যাকেট, অব্যবহৃত কমোড দেখিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সচেতন করেন মেয়র।
শিক্ষার্থীরা মেয়রের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিন দিনে এক দিন জমা পানি ফেলে দেয়ার ও প্রতি শনিবার সকাল দশটায় দশ মিনিট বাসা-বাড়ি পরিষ্কার করার অঙ্গীকার করে।
এলাকাবাসীর উদ্দেশে মেয়র বলেন, ‘যেকোনো উন্নয়ন কার্যক্রম চলাকালে মানুষের চলাচলে কিছুটা বিঘ্ন হয়। নতুনভাবে সংযুক্ত ওয়ার্ডগুলোতে টেকসই উন্নয়নের জন্য আমরা প্রশস্ত ড্রেন নির্মাণ করে তারপর রাস্তা নির্মাণ করছি। এ কারণে সময় একটু বেশি লাগছে। জলাবদ্ধতা যেন না হয় সে জন্য রাস্তা নির্মাণের আগে প্রশস্ত ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। রাস্তা যদি ২০ ফুট প্রশস্ত না হয়, সেখানে সিটি করপোরেশন কোনো কাজ করবে না।'