রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসমাবেশ শুরু হয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য আজিজ আহমেদ ইউসুফের কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সোমবার বেলা ২টা ৫৮ মিনিটে এ সমাবেশ শুরু হয়।
কোরআন তেলাওয়াতের পর বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দিতে শুরু করেন।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে থাকা ফুটওভার ব্রিজের পাশে উদ্যানের ভেতরে বিএনপির সমাবেশের মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতা-কর্মীরা দলে দলে সমাবেশস্থলে যোগ দিচ্ছেন।
সমাবেশের কারণে মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগ এবং শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবন রোডে হালকা যানজটের সৃষ্টি হয়েছে, তবে এ যানজট বেশিক্ষণ থাকছে না।
মিছিলে আসা নেতা-কর্মীরা গাড়িকে জায়গা করে দিচ্ছেন। মিছিল সমাবেশস্থলে ঢুকে গেলে গাড়ি চলাচল আবার শুরু হয়।
কিছুক্ষণ পরপর মিছিলের কারণে সড়কে গাড়িগুলো থমকে যাচ্ছে। এতে কিছুক্ষণ যানজটের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে শনিবার অবস্থান কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ করে তার প্রতিবাদে আজকের এ সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি।
সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা আবদুস সালাম সভাপতিত্ব করছেন।
সমাবেশের শুরুতে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) এক নেতা এবং তার পরে মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম বক্তব্য দেন। পরে মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘স্টার জলসা থেকে নাটক শিখে নিশিরাতের সরকারের নাটক শুরু করেছে, কিন্তু তাদের কোনো রং-তামাশা কাজে লাগবে না। জনগণের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন হবেই।’
মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) তারা যখন আমাদের বাধা দিয়েছে, আমরা এটি রুখে দিতে পারতাম, কিন্তু আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই অবস্থান নিয়েছি। তাই কাউকে আঘাত করিনি, কিন্তু যেদিন আমাদের দল বিএনপি বলবে, প্রতিরোধ আর প্রতিশোধ, সেদিন এই আওয়ামী গুন্ডারা পালানোর জায়গা পাবে না।’
ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ বলেন, ‘গতকাল আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান থেকে ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহইয়াকেসহ যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
পরে ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম তালুকদার বক্তব্য দেন।
কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, ‘আমরা থামব না। থামার জন্য আমরা মাঠে নামিনি।
‘আমরা ভোটাধিকারের কথা বলব। আমরা আমাদের সহযোদ্ধাদের রক্তের প্রতিশোধ নিতে স্লোগান দেব। কেউ আমাদের রুখতে পারবে না।’
ড্যাবের সভাপতি হারুণ অর রশীদ বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে আমাদের নেতা-কর্মীদের আহত গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা মনে করেছে, এর মাধ্যমে আমাদের সমাবেশ থেকে বিরত রাখবে, কিন্তু তারেক রহমানের সৈনিকরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কখনেও থামবে না।’
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা লড়াই করছি। লড়াই করছি ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, কিন্তু এই ভোটচোর সরকারের পুলিশ প্রশাসন আমাদের ওপর আক্রমণ করেছে। অবিলম্বে আমরা এই হাসিনার পদত্যাগ করিয়ে আমাদের এক দফা দাবি সফল করব।’
বেলা সাড়ে তিনটায় সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সমাবেশে যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ‘অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে পুলিশ ভেবেছে আমাদের অবস্থান কর্মসূচি বানচাল করে দেবে। যারা এই হামলা চালিয়েছে তাদের বিচার এই বাংলার মাটিতেই করা হবে।
‘গ্রেপ্তার, জুলুম করে কোনো সরকার টিকে থাকতে পারেনি। হাসিনাও টিকে থাকতে পারবে না। আমরা আমাদের কোনো নেতা-কর্মীর মুক্তি চাই না। আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা তাদের মুক্ত করে আনব।’