বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অদম্য ৩ যমজ

  • প্রতিনিধি, দিনাজপুর    
  • ৩০ জুলাই, ২০২৩ ১৭:৫০

বিরামপুর উপজেলার চন্ডীপুর গ্রামের যমজ ৩ ভাইবোন লাসার সৌরভ মুর্মু, মেরি মৌমিতা মুর্মু ও মারথা জেনিভা মুর্মু বিরামপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এসএসসির ফলাফলে তারা তিনজনই জিপিএ-৫ পায়।

দিনাজপুরে এবার এসএসসি পরীক্ষায় এক সঙ্গে জিপিএ-৫ পাওয়া ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর যমজ ৩ ভাইবোনকে সংবর্ধনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। অভাবের সংসারে এক সেট বই দিয়েই এই তিন ভাইবোন পড়াশোনা করেছে।

রোববার দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে তাদেরকে সংবর্ধনা দেন জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দেবাশীষ চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আনিচুর রহমান, সংবর্ধনা পাওয়া শিক্ষার্থীদের বাবা জোহানেশ মুর্মু ও মা সোহাগিনী হাঁসদা উপস্থিত ছিলেন।

দরিদ্র পরিবারের এই তিনি শিক্ষার্থীকে আর্থিক প্রনোদনা দেয়া হয় এবং ভবিষ্যতে তাদের পড়ালেখার খরচ বহনসহ যাবতীয় বিষয়ে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।

জানা যায়, জেলার বিরামপুর উপজেলার চন্ডীপুর গ্রামের যমজ ৩ ভাইবোন লাসার সৌরভ মুর্মু, মেরি মৌমিতা মুর্মু ও মারথা জেনিভা মুর্মু বিরামপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এসএসসির ফলাফলে তারা তিনজনই জিপিএ-৫ পায়।

একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করা তার বাবার স্বল্প আয়। তাদের এমন সাফল্যে খুশি পরিবারসহ সবাই। বড় হয়ে দুই বোনই চিকিৎসক হতে চায়। তবে ভাইয়ের স্বপ্ন সে হবে প্রকৌশলী।

লাসার সৌরভ মুর্মু বলেছে, অভাবের সংসার। আমরা ৩ ভাইবোন এক সঙ্গে পড়ালেখা করি। পাঠ্যবই স্কুল থেকে দেয়া হলেও নোট বই, গাইড, টেস্ট পেপার, সাজেসনসহ যাবতীয় বই এক সঙ্গে ৩ জনকে কিনে দেয়ার সামর্থ আমাদের বাবার নাই। আমরা এক সেট বই নিয়ে পড়ালেখা করেছি। বড়ির পাশের বড় দাদা ও দিদিদের বই নিয়ে এসে পড়তাম।

বোন মেরি মৌমিতা মুর্মু বলে, আমার বাবা বলতো যে, পানির মত তরল হয়ে ভাসো, কিন্তু ভেসে যেওনা। আমরা বাবা-মায়ের কথামত পড়ালেখা করেছি। তাদের আশা-আকঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পেরেছি। এর চেয়ে বড় আনন্দের আর কি হতে পারে।

তাদের মা সোহাগিনী হাঁসদা বলেন, ‘আমরা তাদেরকে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছি। এখন ভালো ফলাফল করেছে, এতে আনন্দিত। তবে এখন হিমশিম খাচ্ছি। তাদের বাবার একজনের উপার্জনের সংসারে ৫ জন সদস্য। তারপর তাদের পড়ালেখার খরচ, এটি নিয়ে একটু দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি।’

তাদের বাবা জোহানেশ মুর্মু বলেন, ‘অনেক ছেলেমেয়েই ভালো জামা-কাপড়, ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যায়। কিন্তু আমার বাচ্চাদের তা দেয়ার মতো সামর্থ্য নাই। এরমধ্যেই আমি সাধ্যমত চেষ্টা করেছি।’

জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে বিভিন্ন ভাতা প্রদান করেন। যার কারণে তারা একটু সহযোগিতা পেয়েছে। এর কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রীর কাছে অবশ্যই যাবে। আমরা তাদেরকে উৎসাহ দেয়ার জন্য এই সংবর্ধনা প্রদান করলাম। আগামীতে তাদের পড়ালেখার জন্য প্রয়োজন ও যথাসাধ্য সহযোগিতা করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর