সৌদি আরবে প্রাণ হারানো যশোরের শার্শার রুবেল হোসেনের মরদেহের পরিবর্তে পাঠানো হয়েছে কিশোরগঞ্জের মোজাম্মেল হকের মরদেহ।
সৌদির হিমঘর থেকে মরদেহ বদল হয়েছে বলে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের মোজাম্মেল হকের ভাতিজা নাহিদ হাসান জিকো।
তিনি বলেন, ‘মোজাম্মেল ১৭ জুলাই সৌদি আরবের রিয়াদ শহরে মারা যান। কর্তৃপক্ষের ভুল শনাক্তের কারণে মোজাম্মেলের মরদেহ যশোরে পাঠানো হয়েছে।’
রুবেল এক বছর আগে একটি স্কুলের পরিচ্ছন্নকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন বলে তার স্বজনরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় কায়বা ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন বলেন, ‘যশোরের শার্শা উপজেলার ৭ নম্বর কায়বা ইউনিয়নের বাগুড়ী গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে ২২ বছর বয়সী রুবেল হোসেন সৌদি আরবে থাকা অবস্থায় ৩ জুলাই বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
‘বুধবার রুবেলের মরদেহ দেশে আসার পর ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পরিবার মরদেহ গ্রহণ করেন। বিকেলে মরদেহ নিয়ে বাড়িতে পৌঁছানোর পর কফিন খুলে স্বজনরা মরদেহটি রুবেলের নয় বলে শনাক্ত করলেও প্রশাসনের লোকজনসহ সকলেই মরদেহটি ফুলে বিকৃতি হয়ে গেছে বলে দ্রুত দাফন সম্পন্ন করতে বলে। এ সময় স্থানীয়রা তার জানাজা শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সরকারি কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করেন।’
এদিকে বৃহস্পতিবার সৌদি আরব থেকে সংবাদ পেয়ে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থানার জগদল গ্রামের তৈয়েব আলীর ছেলে মোজাম্মেল হকের স্বজনরা তার মরদেহ নিতে আসেন শার্শায় রুবেলদের বাড়িতে।
তারা জানান, রুবেলের মরদেহ বৃহস্পতিবার দেশে আসছে। সৌদির হিমঘর থেকে মরদেহ বদল হয়ে গেছে বলে সৌদি থেকে মোজাম্মেলের সহকর্মীরা জানিয়েছেন। রুবেলের কফিনে মোজাম্মেলের মরদেহ এসেছে।
রুবেলের বাবা ফারুক হোসেন বলেন, ‘সৌদি থেকে পাঠানো কফিন বক্সের ওপর রুবেলের বাবা মায়ের নামসহ পূর্ণ ঠিকানা লেখা ছিল। বিমানবন্দর থেকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা মরদেহের কফিন বক্স আমাদের কাছে হস্তান্তর করেন। সেখানে আমরা তো আর বক্স খুলে দেখিনি।’
মোজাম্মেলের স্বজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পরে সন্ধ্যার দিকে প্রশাসনের উপস্থিতিতে বাগআচড়া সরকারি কবরস্থান থেকে মরদেহটি উত্তোলনের পর মরদেহটি মোজাম্মেলের বলে শনাক্ত করেন তার শ্যালক কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর থানার জগদল গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে ইনামুল হক।
এদিকে মরদেহ উত্তোলনের পর মোজাম্মেলের মরদেহ শনাক্তের পর রুবেলের মায়ের আহাজারি আর থামছে না।
রুবেলের মা ময়না খাতুন কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘তোমরা এ মরদেহ নিয়ে যাও তবে আমার রুবেলকে তোমরা এনে দাও।’
কায়বা ইউপি চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন জানান, মোজাম্মেল হকের মরদেহটি তার স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। রুবেলের মরদেহটি দেশে পৌঁছালে সেটা যাতে দ্রুত শার্শার বাড়িতে পৌঁছায় সে ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।