বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাজধানীর প্রবেশপথে তল্লাশি, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রোডে বন্ধ বাস

  • প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ    
  • ২৮ জুলাই, ২০২৩ ১১:৩৩

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এসএম জহিরুল ইসলাম জানান, সমাবেশকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের কোথাও যেন কোনো ধরনের হামলা, নাশকতা, অপ্রীতিকর ঘটনা ও জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কেউ করতে না পারে, সে জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।

একই দিনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের তিন সংগঠনের মহাসমাবেশকে সামনে রেখে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে রাজধানীর প্রবেশপথ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের অংশে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি করতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের।

এমন বাস্তবতায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রোডে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন পরিবহন মালিকরা।

শুক্রবার ভোর থেকে ঢাকা প্রবেশের পথ সাইনবোর্ড এলাকাতে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চলছে। সাঁজোয়া যান, ওয়াটার ক্যানন, এপিসি ভ্যান নিয়ে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে সেখানে।

মৌচাক, কাঁচপুর, মদনপুর ও মেঘনা এলাকাতে পুলিশি নজরদারি দেখা গেছে।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের তারাব, গাউছিয়া ও ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের পাগলা এলাকায় টহল পুলিশের মাধ্যমে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সড়কের কোথাও জটলা কিংবা সন্দেহভাজন মনে হলেই পথচারী ও স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

এর আগে বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় ঢাকামুখী লেনে পুলিশি চৌকি স্থাপন করে যাত্রীদের তল্লাশি করতে দেখা যায়।

বাড়তি এ নিরাপত্তাকে নিয়মিত কাজের অংশ বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঢাকায় মহাসমাবেশে যোগদান করা নেতা-কর্মীদের বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এসএম জহিরুল ইসলাম।

তিনি জানান, সমাবেশকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের কোথাও যেন কোনো ধরনের হামলা, নাশকতা, অপ্রীতিকর ঘটনা ও জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কেউ করতে না পারে, সে জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রোডে বাস চলাচল বন্ধ। ছবি: নিউজবাংলা

বাস, প্রাইভেট কারসহ ব্যক্তিগত যানবাহনে পুলিশি তল্লাশিতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

তাদের ভাষ্য, কাজে বেরিয়ে পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

এদিকে শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পথে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় রাজধানীর গুলিস্তান, মতিঝিল, মিরপুর ও গাবতলীরগামী যাত্রীরা পড়েন ভোগান্তিতে।

সাইনবোর্ড এলাকায় সুমন মিয়া নামের এক যাত্রী বলেন, ‘নিউমার্কেটে দোকানে যেতে রওনা হয়েছি। রাস্তায় অন্তত তিন পুলিশ সদস্য জিজ্ঞেসাবাদ করেছেন। যারা সমাবেশে যাবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করুন। সাধারণ মানুষ রীতিমতো বিরক্ত।’

মারুফ নামের আরেক যাত্রী বলেন, ‘জরুরি কাজে মিরপুর যাচ্ছি। রাস্তায় পুলিশ চেক করছে ভালো কথা, কিন্তু হয়রানি কেন? রাস্তায় দাঁড়াতেই পারছি না, এমন অবস্থা। আবার গাড়িতে কই যাবে, কেন যাবে, এসব কথা জিজ্ঞাসা করছে।’

মহাসড়কে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগামী যাত্রী লোকমান মিয়া বলেন, ‘ছেলে অসুস্থ, তাই হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু রাস্তায় তো গাড়ির সংকট।

‘তাই সিএনজি করে যাচ্ছি। ভাড়া অনেক বেশি। তার ওপর মোড়ে মোড়ে পুলিশ গাড়ি থামাচ্ছে। এভাবেই যেতে হবে। এ ছাড়া উপায় নেই৷’

হঠাৎ করে কেন বাস চলাচল বন্ধ জানতে চাইলে জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল হোসেনের মোবাইলফোনে কল করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

জেলা বাস, মিনি বাস মালিক সমিতির সভাপতি দিদারুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে যেতে নারায়ণগঞ্জের নেতা-কর্মীরা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রোডে চলাচলরত বাসগুলো রিজার্ভ নিয়েছে। এ কারণে সাধারণ যাত্রী নিয়ে বাস চলাচল করছে না।’

পুরনো মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপির ১৮ নেতা-কর্মী

শুক্রবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে নাশকতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পুলিশের ওপর হামলাসহ সরকার বিরোধী কার্যক্রমে সম্পৃক্ততার অভিযোগে আনা হয়েছে। যদিও সবার নাম প্রকাশ করেনি। আর গ্রেপ্তারকৃত সবাই পুলিশের করা আগের মামলার আসামি।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক সভাপতি খন্দকার হুমায়ুন কবির, ফতুল্লা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সেলিম চৌধুরী কমল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক শাহআলম মাস্টার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী ভূঁইয়া, সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক শহীদ সরকার, সোনারগাঁ উপজেলা তাঁতীদলের সভাপতি আলী আকবর, সিদ্ধিরগঞ্জের ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি শাহজাহান ভূঁইয়া।

অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা হলেন ফতুল্লার শাহরাজ, সদর থানার নলুয়াপাড়া এলাকার মো. শাহজালাল ওরফে শাহজামান, সিদ্ধিরগঞ্জের আকাশ মাহমুদ ওরফে শহীদুল্লা, সোনারগাঁয়ের নাগপাড়ার আব্দুল করিম, উচিতপুরা ইউনিয়নের যুবদল নেতা শাজাহান, বন্দরের নবীগঞ্জের মোক্তার হোসেন ও তিনগাঁও এলাকার বাবুল হোসেন। রূপগঞ্জের মনজু মিয়া, কবীর হোসেন ও মো. সিরাজুল ইসলাম।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের সংখ্যা এখন পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে নয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেই পুলিশের নিয়মিত অভিযান চলছে।

‘অহেতুক কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। আর মামলার আসামি গ্রেপ্তার করা আমাদের একটি রুটিন ওয়ার্ক।’

বাসে বাসে পুলিশের তল্লাশি চলছে। ছবি: নিউজবাংলা

আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত ১৮ জনকে আগের মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশের এ কার্যক্রমকে অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘মহাসমাবেশে নেতা-কর্মীদের যোগদান বাধাগ্রস্ত করতেই পুলিশের এমন তৎপরতা। বিএনপি নেতা-কর্মীদের হয়রানি ও গণগ্রেপ্তার করেও আন্দোলেনকে থামানো যাবে না।’

বিএনপিতে গ্রেপ্তার আতঙ্ক ছড়িয়ে এক দফার আন্দোলন বন্ধ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।

তিনি বলেন, ‘মহাসমাবেশ পণ্ড করতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তার ও ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টি করতে পুলিশ প্রশাসন সরকারের হয়ে কাজ করছে।’

এ বিভাগের আরো খবর