২৩টি শর্ত দিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে শুক্রবার তাদের আবেদনকৃত জায়গায় সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার বিকেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক এ তথ্য জানান।
বিএনপির মহাসমাবেশ ও আওয়ামী লীগের তিনটি সংগঠনের শান্তি সমাবেশসহ সার্বিক বিষয়ে ডিএমপি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগের তিনটি সংগঠন সমাবেশ ও বিএনপি মহাসমাবেশ করতে চেয়েছিল। তারা এ মহাসমাবেশ না করে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষা করেছে। আমরা সে জন্য দুই দলকে ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি বলেন, ‘আজকের পরিববর্তে আগামীকাল ছুটির দিন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ সমাবেশ ও বিএনপি একটি মহাসমাবেশ আগামীকাল করার জন্য তারা আবার আবেদন করেছে।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আগামীকাল বন্ধের দিন। তার পরওও আমাদের বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। আশুরা শুরু হয়েছে। ২৪ জুলাই থেকে প্রতিদিনই তাজিয়া মিছিল হচ্ছে। আজকে ছিল, রাতেও আছে, আগামীকালও আছে। আশুরার চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও সমাবেশ করার যে অনুমতি চাওয়া হয়েছে, রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে আগামীকাল দুটো দলকেই সমাবেশ করার অনুমতি দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
‘আমাদের কাছে বিএনপি তার পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছে এবং আওয়ামী লীগ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছে। আমরা দুই দলকেই ২৩টি শর্তসাপেক্ষে তাদের আবেদনকৃত জায়গায় সমাবেশ করার অনুমতি দিচ্ছি।’
সমাবেশের সীমানা কতটুকু হবে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বিএনপির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে পুলিশ হাসপাতালের মোড় পর্যন্ত। এই জায়গার মধ্যে তাদের মিটিং প্লেস ও মাইকিং সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, তারা মহানগর নাট্যমঞ্চ থেকে পশ্চিমে মুক্তাঙ্গন পর্যন্ত। এই এলাকার মধ্যে তাদের সমাবেশ ও মাইকিং সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
‘দুই দলের ক্ষেত্রেই আমাদের নির্দেশ থাকবে, অনুরোধ থাকবে, লাঠিসোঁটা কোনোভাবেই সমাবেশে আনা যাবে না। কোনো ব্যাগ বহন করতে পারবেন না। রাষ্ট্রদ্রোহী কোনো বক্তব্য প্রদান করতে পারবেন না। যে সীমানা দেয়া হয়েছে, এর বাইরে মাইক ব্যবহার করা যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘জনদুর্ভোগ কমানোর জন্য স্ব স্ব দল নিজস্ব ভলান্টিয়ার রাখবে। সুশৃঙ্খল রাখার জন্য স্ব স্ব দল স্বেচ্ছাসেবক রাখবে।’
দুই দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘কোনো দলই আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয় এমন কিছু করবেন না। কোনো দলের পক্ষ থেকে এ ধরনের অবস্থা দেখলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
রাজধানীতে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সমাবেশস্থল নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। শুরুতে বিএনপিকে গোলাপবাগ মাঠ এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তিন সংগঠনকে আগারগাঁও মাঠে ডিএমপি সমাবেশ করার পরামর্শ দিলেও তাতে রাজি হয়নি দুই দল।
বিএনপি নয়াপল্টনে আর ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ সমাবেশ করতে চেয়েছিল জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে। এ নিয়ে শুরুতে কঠোর অবস্থানে থাকলেও তা থেকে সরে আসে ডিএমপি।