বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অধ্যাপক তাহের হত্যা: দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর যেকোনো সময়

  • প্রতিবেদক, রাজশাহী   
  • ২৭ জুলাই, ২০২৩ ১০:৫৯

দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর নিয়ে মঙ্গলবার থেকেই ব্যাপক গুঞ্জন চলছে। ওই দিন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের স্বজনরা কারাগারের ভেতরে গিয়ে দেখাও করে এসেছেন। তবে কারা কর্তৃপক্ষ দিনক্ষণ বা সময় নিয়ে কঠোর গোপনীয়তা মেনে চলছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হতে পারে যেকোনো সময়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন রাবির ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও ড. তাহেরের বাড়ির কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম।

এ দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর নিয়ে মঙ্গলবার থেকেই ব্যাপক গুঞ্জন চলছে। ওই দিন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের স্বজনরা কারাগারের ভেতরে গিয়ে দেখাও করে এসেছেন, তবে কারা কর্তৃপক্ষ দিনক্ষণ বা সময় নিয়ে কঠোর গোপনীয়তা মেনে চলছে।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল জলিল এ নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।

তিনি বলেন, কারা অধিদপ্তর থেকে এ নিয়ে কিছু বলতে মানা করা হয়েছে, তবে ফাঁসি কার্যকরের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

কারা সূত্র জানিয়েছে, ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও মো. জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সাত থেকে আট জল্লাদ। এ ছাড়া মরদেহ পরিবহনের জন্য আলাদা দুইটি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে।

পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎ

ফাঁসি কার্যকরের আগে দণ্ডপ্রাপ্তদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের দেখা করার যে প্রক্রিয়া, সেটিও এরই মধ্যে হয়ে গেছে। দুই আসামির পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার দেখা করেছেন।

দুই আসামির মধ্যে ড. মহিউদ্দিনের পরিবারের সদস্যরা অনেকটা গোপনীয়তার সঙ্গেই দেখা করে গেছেন। মঙ্গলবার দুপুরের আগেই মাইক্রোবাসে করে পরিবারের সদস্যরা কারা ফটকের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করেন এবং দেখা করে সেই মাইক্রোবাসেই বেরিয়ে যান।

জাহাঙ্গীরের পরিবারের সদস্যরা দেখা করে যাওয়ার সময় সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

জাহাঙ্গীরের বাবা, ভাইসহ বিভিন্ন পর্যায়ে ৩৫ স্বজন দেখা করে গেছেন। জাহাঙ্গীরের বাবা আজিমুদ্দিনকে হইলচেয়ারে করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে প্রবেশ করে তারা বের হন বিকেল পৌনে চারটার দিকে।

বের হওয়ার সময় জাহাঙ্গীরের ভাই সোহরাব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “জাহাঙ্গীর স্বাভাবিক ছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘এ মৃত্যু নিয়ে আমার ভয় নেই। আমার এ মৃত্যু রোমান্টিক। এ মৃত্যু আমার জন্য পরকালে ভালো কিছু নিয়ে আসতে পারে। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। কোনো ভুল করে থাকলে ক্ষমা করে দিয়েন।’”

প্রেক্ষাপট

২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাবির শিক্ষক কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ। পদোন্নতি সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে নৃশংস হত্যার শিকার হন তিনি।

৩ ফেব্রুয়ারি নিহত অধ্যাপকের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

এ মামলায় ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেয়।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, নিহত অধ্যাপক ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর ভাই আবদুস সালাম।

২০০৮ সালে বিচারিক আদালতের রায়ের পর নিয়ম অনুযায়ী ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে যায়। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন।

শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় দুই আসামির ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল এবং অন্য দুই আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন করে হাইকোর্ট।

ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল থাকা এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া চার আসামিই কারাগারে রয়েছেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন, তবে তা নাকচ করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এর পরই ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু করে রাজশাহী কারা কর্তৃপক্ষ।

এ বিভাগের আরো খবর