রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর দু’পারে খেয়া নৌকা চলাচল বন্ধ রয়েছে। নদীর দুই পারে মালামাল ও যাত্রী পরিবহন করা খেয়া নৌকা বন্ধে ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই পারের যাত্রীসাধারণ।
মাঝিদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ খেয়া পারাপার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। তবে মাঝিদের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
বুধবার বিকেল পাঁচটার পর থেকেই সদরঘাট এলাকায় খেয়া পারাপার কমতে শুরু করে। সন্ধ্যায় তা একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, অন্যান্য দিন বিকেল থেকে বুড়িগঙ্গায় সবচেয়ে বেশি খেয়া চলাচল করলেও আজ দেখা গেছে তার উল্টো চিত্র। বিকেলে ৫টার পর থেকেই নৌকা চালানো বন্ধ করে ঘাটে নৌকা বাঁধতে শুরু করেন মাঝিরা। সন্ধ্যার দিকে চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন দুই পারের যাত্রীরা।
যাত্রীরা নদী পার হতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। কেরানীগঞ্জ থেকে সদরঘাট এলাকায়ও খেয়া নৌকায় আসতে পারছেন না যাত্রীরা। খেয়া পারাপার বন্ধ থাকায় আধা কিলোমিটার দূরের বাবুবাজার ব্রীজ ব্যবহার করে নদী পার হতে হচ্ছে তাদের।
বুড়িগঙ্গার দু’পারে যাতায়াত করা যাত্রীরা বলছেন, ব্রীজ দিয়ে যাতায়াত করলে প্রচুর ঝামেলার মধ্যে পড়তে হয়। এতো সময় বেশি লাগে, পাশাপাশি দুর্ভোগও পোহাতে হয়। নদীতে খেয়া নৌকায় স্বল্প সময়ে খুব দ্রুত ও স্বস্থিতে চলাচল করা যায়।
ওয়াইজ ঘাট এলাকার খেয়া নৌকার মাঝি মোখলেস উদ্দিন বলেন, ‘সারাদিন তো নৌকা চালাইছি। বিকেলে পুলিশ এসে বলে গেছে সন্ধ্যার মধ্যে বন্ধ করে দিতে। তাই ঘাটে নৌকা বেঁধে এখন চলে যাচ্ছি। কাল নাকি বিএনপির সমাবেশ আছে; সেজন্য বন্ধ করে দিতে বলছে। আগামীকালও বন্ধ থাকবে মনে হয়।’
শাহিনুর ইসলাম নামের আরেক খেয়া নৌকার মাঝি বলেন, ‘পুলিশ ঘাটে এসে বলে গেছে সন্ধ্যার মধ্যে সব খেয়া চলাচল বন্ধ রাখার জন্য। সেজন্য নৌকা চালানো বন্ধ করে দিতে হলো।
‘সন্ধ্যার দিকেই যাত্রী বেশি হয়। মানু্ষজন অফিস-আদালত শেষ করে বাড়িতে ফিরে। এখন তাদের নদী পার হতেও কষ্ট হবে। আমাদেরও তো আয় হয় এই সময়েই। সারাদিন তো তেমন যাত্রী থাকে না।’
সুমন রানা নামের এক যাত্রী বলেন, ‘সকালে নৌকা দিয়েই কেরানীগঞ্জ থেকে এই পাড়ে আসলাম। এখন ঘাটে এসে দেখি নৌকা বন্ধ। এখন বাবুবাজার ব্রিজ দিয়ে হেঁটে পার হতে হবে। এছাড়া তো আর উপায় নেই।’
হাসান মাহমুদ নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘দোকানের জন্য মালামাল নিতে বিকেলেই আসলাম খেয়া দিয়ে। এখন মালামাল নিয়ে ঘাটে এসে দেখি খেয়া বন্ধ করে দিছে। এখন আবার দ্বিগুণ টাকা খরচ করে ভ্যানে মালামাল নিয়ে বাবুবাজার ব্রিজ দিয়ে পার হতে হবে।’
এ বিষয়ে সদরঘাট নৌ থানার ওসি শফিকুর রহমান খান বলেন, ‘এটা মাঝিদের ব্যাপার। খেয়া পারাপার বন্ধ রাখা না রাখার ব্যাপারে তারা অনেক কিছু বলতেই পারে। আমরা এসব বিষয়ে কিছু জানি না।’
পুলিশের পক্ষ থেকে খেয়া চলাচল বন্ধ রাখার জন্য তাদের কিছু বলা হয়নি বলে জানান ওসি শফিকুর রহমান।