লক্ষ্মীপুর সদরের চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি মামুনুর রশীদ হত্যার মামলায় পাঁচজনের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড ও ১৪ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বুধবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মো. মধু, মো. মামুন, বাবু ওরফে গলাকাটা বাবু, মো. শামীম, কাউছার ওরফে ছোট কাউছার।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন জাহাঙ্গীর আলম, নেহাল, মো. বোরহান, মো. তুহিন, জাকির হোসেন, সোহরাব হোসেন, বাছির আহাম্মদ, মো. মিজান, আলমগীর হোসেন, কছির আহম্মেদ, কামরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, তারেক আজিজ সুজন, মো. টিপন ওরফে জাহাঙ্গীর আলম।
জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন জানান, রায়ের সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. মধু ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি টিপন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন। তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা যায়, রাজনীতি ও সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত থাকায় সোলায়মান উদ্দিন জিসানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় মামুনুর রশিদের। এতে জিসান বাহিনীর সদস্যরা মামুনকে হত্যার জন্য হুমকি দিতেন। পরে জিসান র্যাবের হাতে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হন। এতে জিসানের ছোটভাই তুহিন সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান হয়ে এলাকায় অরাজকতা সৃষ্টি করে আসছিলেন। আর এ সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজনকে গ্রেপ্তারে পুলিশকে সহযোগীতা করেন মামুন।
এদিকে সন্ত্রাসী জিসান হত্যার ঘটনায় মামুন ও ওমর ফারুক নামে আরও এক ব্যক্তিকে দায়ী করেন তুহিন। এ কারণে বাহিনীর সক্রিয়দের নিয়ে মামুন ও ফারুককে হত্যার পরিকল্পনা করেন তুহিন।
২০১৫ সালের ১৮ মে রাতে মামুনকে আসামিরা চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব আমানি লক্ষ্মীপুর গ্রামে গুলি করে হত্যা করেন।
পরদিন মামুনের ভাই ফখরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৪ থেকে ১৫ জনকে আসামি করে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম হাক্কানি আদালতে ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।
দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড, ১৪ জনের যাবজ্জীবন ও ২ জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।