বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১০ ঘণ্টায় মামলার তদন্ত সম্পন্ন শুধু সিনেমায় সম্ভব: হাইকোর্ট

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২৫ জুলাই, ২০২৩ ২৩:৫৯

মঙ্গলবার আলোচিত মানিকগঞ্জে রকেট গতিতে একটি হত্যার মামলার তদন্ত সম্পন্ন নিয়ে শুনানির এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে এ প্রশ্ন করেন বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এ সময় আদালত পিবিআইয়ের তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

একটি হত্যা মামলার তদন্ত মাত্র ১০ ঘণ্টায় সম্পন্ন হয়েছে, এটা কেবল মাত্র সিনেমায় বা সুপারম্যান ছাড়া আর কারো পক্ষে করা সম্ভব?- রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে এমন প্রশ্ন করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার আলোচিত মানিকগঞ্জে রকেট গতিতে একটি হত্যার মামলার তদন্ত সম্পন্ন নিয়ে শুনানির এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে এ প্রশ্ন করেন বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এ সময় আদালত পিবিআইয়ের তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। পরে লিখিতভাবে দুইপক্ষের বক্তব্য উপস্থাপন এবং পরবর্তী আদেশের জন্য ১ আগস্ট দিন ঠিক করে দিয়েছেন আদালত।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।

হাইকোর্ট বলেন, ‘সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করেছেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এটা কি করে সম্ভব হয়, এটা তো সিনেমা বা সুপারম্যান ছাড়া করো পক্ষে সম্ভব না।’

পরে আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে আমরা কয়েকটি বিষয়ে উপস্থাপন করেছি। তার মধ্যে একটি হলো- রকিব নামে এক পুলিশ সদস্য বলছেন, বাদীর কাছে ২৪ তারিখ শনিবার বিকাল তিনটায় লাশ হস্তান্তর করেছেন। অন্যদিকে বাদী তার জবানবন্দিতে বলছেন, ২৫ তারিখ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মানিকগঞ্জের মর্গ থেকে লাশ গ্রহণ করে আজিমপুর কবরস্থানে দুপুর দুইটায় দাফন করেছেন।

‘এখন আমাদের বক্তব্য হলো- দ্বিতীয় যে তদন্ত দেয়া হয়েছিল, সেই তদন্তকারী অফিসার প্রথম তদন্তকারীকে বাঁচাতে চেষ্টা করছেন। তার কারণে একদিকে দ্বিতীয় তদন্তকারী আগের তদন্তকে বাস্তবসম্মত বলছেন না। অন্যদিকে সেই তদন্তকেই আবার সঠিক হিসেবে ধরে নিয়েছেন। যদি তা’ই না হয়, তাহলে দ্বিতীয় তদন্তকারীর মামলার এফআইআর কে টাইপ করেছেন, কোথা থেকে করেছেন ইত্যাদি তদন্ত করা দরকার ছিল। সেটি তিনি করেননি।

‘যেখানে বাদী বলছেন এ মামলার এফআইআর তিনি করেননি, আর পুলিশ বলছে বাদী এফআইআর করেছেন। তাহলে এটাই তো তদন্তের দাবি রাখে। দ্বিতীয় তদন্তকারী সেটিও করেননি।’

তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় আরেকটি প্রশ্ন হলো- ওই একই জায়গায় এর আগেও তিনটা মার্ডার হয়েছে। সেই মর্মেও তারা কোনো তদন্ত করেননি। তৃতীয় প্রশ্ন হলো- ১০ ঘণ্টায় এত মানুষের জবানবন্দি তারা কী করে সংগ্রহ করলো! চতুর্থ হলো- ১৬১ ধারায় জবানবন্দিতে প্রথম তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, তিনি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির হননি, আবার বলেছেন তিনি হাজির হয়ে চলে গেছেন। এর ফলে পুরো বিষয়টিই প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এখন আমরা কোনটা সত্য বলে মনে করবো?

‘আমাদের দাবি হচ্ছে যেহেতু হত্যা হয়েছে; কেউ না কেউ তো করেছে। সেটি সঠিকভাবে উদঘাটন হোক।’

প্রয়োজনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাইবেন বলেও জানান এই আইনজীবী।

মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি হত্যা হত্যার ঘটনায় মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল থেকে শুরু করে ৯টি ধাপ পেরোনোর ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তলব করে গত ১৪ মার্চ আদেশ দেন হাইকোর্ট।

আদেশ অনুযায়ী ৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার পুলিশের উপপরিদর্শক মো. মাসুদ রানাকে কেস ডকেটসহ হাজির হতে বলা হয়।

এ আদেশের পাশাপাশি এ ঘটনায় রুলও জারি করেন আদালত। পরে তদন্তকারী হাজির হলে তার বক্তব্য শুনে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন আদালত। একইসঙ্গে এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের একটি হ্যাচারিতে খুন হন মো. রুবেল নামে ২২ বছর বয়সী এক যুবক। পরদিন নিহতের স্ত্রী চম্পা আক্তার অঞ্জনা বাদী হয়ে সোহেল নামের একজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। সোহেল চম্পা আক্তারের ভাই।

এ বিভাগের আরো খবর