বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দেশি অস্ত্রসহ এমপি বাবলুর ‘দেহরক্ষী’ গ্রেপ্তার

  • প্রতিনিধি, বগুড়া   
  • ২৫ জুলাই, ২০২৩ ১৯:১১

তবে ওমর ফারুককে নিজের দেহরক্ষী হিসেবে অস্বীকার করেছেন সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু। তিনি বলেন, ‘এরকম অনেক মানুষই তার পেছনে থাকেন। ফারুক রাজনীতি করেন এবং মাঝিরা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি।’

বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলুর দেহরক্ষী হিসেবে পরিচিত ওমর ফারুককে দেশি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলা ডোমনপুকুর এলাকা থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন।

সম্প্রতি ওমর ফারুকের দু’হাতে রামদা-সহ ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

ডিবি পুলিশ বলছে, দেশি অস্ত্র দিয়ে প্রভাব ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে বেড়ানো তথ্যের ভিত্তিতে ওমর ফারুক গ্রেপ্তার হয়েছেন।

৪০ বছর বয়সী ওমর ফারুক শাজাহানপুর উপজেলার ডোমনপুকুর দেওয়ানপাড়া মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে এবং মাঝিরা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি।

গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবি পুলিশের ইনচার্জ মোস্তাফিজ হাসান।

স্থানীয়রা জানান, ওমর ফারুক বগুড়া-৭ আসনের (গাবতলী-শাহজাহানপুর) আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলুর দেহরক্ষী হিসেবে পরিচিত। যে কোনো অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্যের সঙ্গে তাকে দেখা যায়।

এ পরিচয়ের পাশাপাশি ওমর ফারুক রামদা, হাসুয়া ধরনের দেশি অস্ত্র নিয়ে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে বেড়াতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এসব কর্মকাণ্ডে স্থানীয় লোকজন অতিষ্ট ছিলেন। কিন্তু স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছের লোক হওয়ায় কেউ কিছু বলার সাহস পান না। এমনকি সংসদ সদস্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চত্বরে রামদা হাতে নিয়ে ওমর ফারুকের ঘোরাফেরার ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাদশা আলমগীর বলেন, ‘ফারুক এমপির নির্দেশে নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তার ভয়ে এলাকার লোক অতিষ্ট।’

তবে ওমর ফারুককে নিজের দেহরক্ষী হিসেবে অস্বীকার করেন সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু। তিনি বলেন, ‘এরকম অনেক মানুষই তার পেছনে থাকেন। ফারুক রাজনীতি করেন এবং মাঝিরা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি।’

ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগে নাম থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন শাজাহানপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি জিয়াউল হক জুয়েল। তবে তার দাবি, ধানের মধ্যে যেমন চিটা থাকে, সেভাবে ওমর ফরুকের নাম কমিটিতে এসেছে। কিন্তু মাঝিড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি এখনও অনুমোদন হয়নি। প্রাথমিকভাবে তার নাম রয়েছে।

জিয়াউল হক জুয়েল বলেন, ‘ওমর ফারুক অনেক আগে থেকেই রেজাউর করিম এমপির হয়ে কাজ করেন। এমপির কাজ করতে গিয়ে ঝামেলায়ও জড়িয়েছেন তিনি। তবে আগে তার বিষয়ে খারাপ রিপোর্ট থাকলে কমিটিতে রাখা হতো না।’

এ বিষয়ে ডিবির ইনচার্জ মোস্তাফিজ হাসান বলেন, ‘আমাদের কাছে গোপন সংবাদ ছিল ওমর ফারুক দেশি অস্ত্র প্রদর্শন করে স্থানীয়ভাবে ভয়-ভীতি দেখাতেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে তাকে ২টি দেশীয় অস্ত্র রামদা-সহ গ্রেপ্তার করা হয়।’

ওমর ফারুক সংসদ সদস্যের দেহরক্ষী কি না- এ বিষয়ে ডিবির ইনচার্জ বলেন, ‘বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য এ বিষয়ে আমাদের কোনো কিছু জানাননি। অস্ত্রপ্রদর্শন করে ভয়-ভীতি দেখানোর অভিযোগে ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা দায়ের হলে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’

রেজাউল করিম ওরফে বাবলু এমপির বিতর্ক

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৭ আসনের ভোটাররা সমর্থন দিলে জাপা প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে এমপি হন রেজাউল করিম ওরফে বাবলু।

‘জিয়া পরিবারের আসন’ হিসেবে পরিচিত বগুড়া-৭ আসনে সংসদ সদস্য হওয়ার পর থেকে রেজাউল করিম ওরফে বাবলুকে নিয়ে বিতর্ক লেগেই আছে। তার বিরুদ্ধে হলফনামায় মামলার তথ্য গোপন করার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া দুদকেও রয়েছে অভিযোগ।

২০২০ সালে বেফাঁস মন্তব্য করেন এমপি বাবলু। ওই বছরের ১৭ নভেম্বর সংসদে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) বিল-২০০০’ সংসদে পাস হওয়ার সময় রেজাউল করিম বলেছিলেন, ‘নারীবাদীরা নারী স্বাধীনতার কথা বলে নারীদের উন্মুক্ত করে চলেছে। এ কারণেই ধর্ষকেরা ধর্ষণের অনুভূতিকে এতটা অ্যাকসেপ্ট করেছে, ধর্ষণে উৎসাহিত হচ্ছে।’

অস্ত্র হাতে ফেসবুকে ছবি দিয়ে ভাইরাল হন এমপি বাবলু। রেজাউল করিম গোলবাগীর একটি ছবি ২০২০ সালের অক্টোবরে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ছবিতে দেখা যায়, হাতে অস্ত্র নিয়ে হাসিমুখে একটি চেয়ারে বসে আছেন তিনি। পাশের টেবিলে আছে গুলির ম্যাগজিন। ছবিটি ভাইরাল হওয়ার পর নতুন করে আলোচনায় আসেন গোলবাগী।

গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের জন্য দেয়া টাকা ফেরত চাওয়া নিয়ে বাকবিতণ্ডার জেরে শাজাহানপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নুর দিকে পিস্তল তাক করেন সংসদ সদস্য (এমপি) রেজাউল করিম বাবলু।

এ বিভাগের আরো খবর