বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ডিএনসিসির ৫ হাজার ২৬৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২৪ জুলাই, ২০২৩ ১৯:৫৬

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা আমাদের ছোটমনিদের জানাতে চাই যে, মশার কামড় ক্ষতিকর। তাদেরকে জানাতে পারলে আমরা মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে পারবো। আমরা আমাদের শিশুদের সুপার হিরো বানাতে চাই, মশার বিরুদ্ধে।

২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য ৫ হাজার ২৬৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। আগের অর্থবছরে বাজেট ছিল ৫ হাজার ৪৮ কোটি ৫ লাখ টাকা, পরে সংশোধিত বাজেট হয় ২ হাজার ৯৫০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

সোমবার সকালে গুলশানে ডিএনসিসি নগরভবনের হল রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন বাজেট ঘোষণা করেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে শুরুতে ‘মশার কামড় ক্ষতিকর’ শীর্ষক একটি কার্টুন ছবি সমৃদ্ধ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র আতিকুল ইসলাম।

মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসাসহ প্রাথমিক সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মশা বিষয়ক এক লাখ সচেতনতামূলক বই বিতরণ করবে উত্তর সিটি কর্পোরেশন।

এই বইটি যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি ডেড কাউন্টিতে শিশুদের মাঝে বিলি করা একটি বইয়ের বঙ্গানুবাদ। ১২ পৃষ্ঠার এই বইয়ে বিভিন্ন কার্টুনসহ সচেতনামূলক বাক্য দেয়া হয়েছে।

এ সময় মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আমাদের ছোটমনিদের জানাতে চাই যে, মশার কামড় ক্ষতিকর। তাদেরকে জানাতে পারলে আমরা মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে পারবো। আমরা আমাদের শিশুদের সুপার হিরো বানাতে চাই, মশার বিরুদ্ধে।

‘শিশুরা যদি মশার বিষয়ে জানতে পারে এবং কামড় থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারে, তবে অনেকাংশেই আমরা মশাবাহিত রোগ রুখতে পারবো। শিশুরা মশার প্রজননস্থল, ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানলে পরিবারে এর প্রভাব পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন থেকে বই উত্তরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দেয়া হবে। এই বই বিতরণ শেষ হলে আমরা আরও বই ছাপিয়ে শিশুদের মাঝে ছড়িয়ে দেবো।’

এ ছাড়াও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে গবেষণা কার্যক্রমে সহায়তার উদ্দেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।

মূলত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অফিসে এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শফিকুর রহমান সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে সমঝোতা স্মারকটি হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত মেয়াদি এ সমঝোতার আওতায় ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন কীটনাশকের কার্যকারিতা ও মশার ঘনত্ব, মশার প্রজাতি এই ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে। আর পরীক্ষার মাধ্যমেই মশা দমনে কীটনাশক প্রয়োগ ও যেকোনো ডিভাইসের ব্যবহার করে মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগার ব্যবহার করবে ডিএনসিসি। ডিএনসিসি থেকে তিনজন কর্মচারী এ কাজে সহযোগীতার জন্য দায়িত্ব পালন করবেন। এ গবেষণার কাজে মূল দায়িত্ব পালন করবেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার ও তার টিম।

পরে ডিএনসিসি মেয়র ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা উপলক্ষ্যে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেন।

মেয়র বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে এবার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশে ডিএনসিসিকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধ পরিকর। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে অনুসরণ করে ডিএনসিসির ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রনয়ণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ডিএনসিসির রাজস্ব অর্জন হয়েছে ১ হাজার ৬২ কোটি ৩৫ লাখ ৬২ হাজার ১০৩ টাকা। এটি উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সক্ষমতার প্রমাণ। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আয় ১৮৩০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ধরা হয়েছে, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ১৮৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বেশি। আমি আশা করছি এ বছরে হোল্ডিং ট্যাক্স, বাজারের সালামি, ট্রেড লাইসেন্স ফি, সম্পত্তি হস্তান্তর ও সড়ক খনন ফি বাবদ আয় বৃদ্ধি পাবে।

মেয়র বলেন, অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স ফি সংগ্রহের ফলে ইতোমধ্যে রাজস্ব উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং পাবলিক সার্ভিস নিশ্চিত করতে অনলাইনে সেবার পরিসর বৃদ্ধি করা হচ্ছে। রাজস্ব বাড়াতে আরও কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি। স্মার্ট পার্কিং ও রিকশায় কিউআর কোড সম্বলিত নম্বর প্লেট সরবরাহের মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও কোরবানির পশুর হাটের ইজারা বাবদ বিগত সময়ের চেয়ে বেশি রাজস্ব আহরণ হবে। বলাবাহুল্য নতুন ওয়ার্ডগুলোতে হোল্ডিং অ্যাসেসমেন্ট করা হলে ভবিষ্যতে গৃহকর বাবদ রাজস্ব আয় অনেক বেড়ে যাবে।

তিনি বলেন, পরিবেশবান্ধব, নান্দনিক ও সুন্দর সবুজ নগরী গড়ার প্রত্যয়ে সাজানো হয়েছে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেট। প্রতিটি খাতে আধুনিকায়ন ও অনলাইনভিত্তিক সেবা প্রদানে জোর দেয়া হয়েছে। এই বাজেট সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে ডিএনসিসির অর্থনীতি আরও শক্তিশালী ও বেগবান হবে। নগরবাসীর জন্য বহুমুখী মানসম্মত সেবা নিশ্চিত হবে।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে আমরা বাজেট বরাদ্দ বাড়িয়েছি। মশক নিয়ন্ত্রণের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনার জন্যও বাজেটে বরাদ্দ আছে। আমরা নানা পদক্ষেপ নিচ্ছি। তবে জনসচেতনতা খুব জরুরি।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দ্রুতই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের প্রধান করে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. এ.কে.এম শফিকুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলামসহ ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কাউন্সিলররা।

এ বিভাগের আরো খবর