এ দেশে অনেকেই রাজনীতি না করে ক্ষমতায় এসেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, দেশে কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নানা কায়দায়, কৌশলে ক্ষমতার মঞ্চে অধিষ্ঠিত হয়ে রাজত্ব করে গেছেন।
সোমবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির শিক্ষা ও মানবসম্পদ উপকমিটি পরিচিতি সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশে প্রধান প্রধান দলের যারা কর্তৃত্বে এবং নেতৃত্বে এসেছেন, তারা রাজনীতি থেকে আসেননি এবং তাদের উত্তরসূরি যারা তাদের ধ্যান ধারণা, মনমানসিকতা রাজনীতি থেকে আসেনি। সেই রাজনীতি উপনিবেশিক বস্তা পচা রাজনীতি! ওই রাজনীতি যারা ধারণ করেন তারা মাটি ও মানুষের নেতা নন।’
তিনি বলেন, ‘দলের উপকমিটির সদস্য কোনোভাবেই দেশের বাইরে থাকতে পারবে না। উপকমিটির কোনো সদস্য অন্য কোনো কমিটিতে থাকতে পারবে না। এক কমিটির কোনো সদস্য অন্য উপকমিটিতে থাকতে পারবে না। উপকমিটির কোনো সদস্য জেলার কোনো সংগঠনের কোনো পদে থাকতে পারবে না।
‘যারা আছেন তারা বাংলাদেশে থাকতে হবে, কতক্ষণ লন্ডনে, কয়েকমাস আমেরিকায়, আমাদের বাংলাদেশ এমন লোক আমাদের উপকমিটিতে কোনো প্রয়োজন নেই।’
কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে কোথাও এরকম লোকজন থাকলে সেটা সংশোধন করার নির্দেশ দেন তিনি।
ভালো ছেলে-মেয়েদের রাজনীতিতে টানার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা ছাত্র সংগঠন আছে। অনেক কমিটি পাঁচ ছয় সাত বছর হয় না। কোথাও কমিটি হলেও কোথাও হলেও ঠিকমতো কাজ করছে না, এগুলো তদারকি করতে হবে, দেখতে হবে।’
ইডেন কলেজের ছাত্রীদের ছাত্র রাজনীতিতে বেশি সক্রিয় করার জানান তিনি।
ছাত্ররাজনীতির নেতৃত্বের গ্ল্যামার আর গাম্ভীর্য সবই হারিয়ে গেছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতির সুদিন ফিরিয়ে আনতে হবে, দেশের জনগণের কাছে ছাত্ররাজনীতি ভালোবাসার হতে হবে। আগে ছাত্রদের সাধারণ মানুষ, সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরা ভালোবাসতো, এখন ভয় করে। ভয় যেন না করে, ভালোবাসতে হবে।
‘ভালোবাসলে ভালো ছেলেমেয়েরা রাজনীতিতে আসবে। আমাদের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করিডোর দিয়ে ছাত্র নেতারা হাঁটতো, তখন মেয়েরা দেখার জন্য ক্লাসরুমের দরজায় চলে আসতো, তারা দেখতো নেতা যাচ্ছে। আর এখন সরে যায়, কারণ তারা ভয় পায়, তাদের ভালোবাসতে হবে তাহলে রাজনীতিকেও তারা ভালবাসবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ছেলে মেয়েরা কেন বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেয় না, পড়াশোনা কেন করে না, এসব প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই করেন। কোনো ছেলে-মেয়ের ভালো ফলাফল পেলেই সঙ্গে সঙ্গে তিনি বলেন বিসিএস দাও। আমাদেরতো লোক দরকার। সচিবালয়ে আরও কোয়ালিটি সম্পন্ন লোক দরকার। এ দেশে কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নানা কায়দায়, কৌশলে ক্ষমতার মঞ্চে অধিষ্ঠিত, তারাই রাজত্ব করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী মাঝে মাঝে খুবই কষ্ট পান, তাকে বাধ্য হয়ে অনেক সময় ভিন্নমতের সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে হয়। এটা তিনি প্রকাশও করেন।’
আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব কে তা সময় বলে দেবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘’সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে দেশের আইসিটিতে নীরব অভ্যুত্থান হয়েছে। অথচ তিনি আসেন নীরবে, চলে যান নিঃশব্দে। আত্মপ্রচারে নিমগ্ন নয়। আমরা মাঝে মাঝে ভাবি প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে তিনি (জয়) কেন আসেন না। সেই প্রশ্নের উত্তরে নেত্রী বলেন, লিডারশীপ কার কাছে যাবে সময় বলে দেবে, ভাগ্য বলে দেবে। আমার কাউকে জোর করে কিছু বানাতে হবে না। সব রাজনৈতিক উপস্থিতি থেকে তিনি (শেখ হাসিনা) তাকে (জয়) বাদ রেখেছেন।’
তিনি বলেন, ‘জয় বলেছিল মায়ের (শেখ হাসিনা) অনুমতি পেলে যাব, মায়ের অনুমতি ছিল না, সেই কারণে আমরা দাওয়াত করেও তাকে সম্মেলনে আনতে পারিনি।’