উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও দুজনকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে টাকা আদায়ের ঘটনায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা হাইকোর্টকে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)।
এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বলেছে, ওই কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্তই (সাসপেন্ড) শেষ কথা নয়।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ মন্তব্য করে।
মন্তব্যের পর আদালত শরীয়তপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়ে আগামী ৬ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করে।
নির্যাতন করে টাকা আদায়ের ঘটনায় আদালতের নির্দেশে সোমবার হাজির হন শরীয়তপুরের পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুস্তাফিজুর রহমান, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। ওই সময় পুলিশের পক্ষ থেকে লিখিত ব্যাখ্যা আদালতে জমা দেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
আদালতে পুলিশের পক্ষে ছিলেন শাহ মঞ্জুরুল হক। আবেদনের পক্ষে ছিলেন মজিবুর রহমান।
পরে আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, ‘আজকে আদালতে পুলিশপ্রধানের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় জড়িত পুলিশের তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তখন আদালত বলেছেন, সাসপেন্ডই শেষ কথা না। পরে আদালত বিচারকের বিষয়ে নথি তলব করে ৬ আগস্ট পরবর্তী দিন ঠিক করে দেন।’
এ আইনজীবী বলেন, ‘জামিনে থাকার পরও তাদেরকে ধরে নিয়ে শুধু নির্যাতনই করেনি, তাদের রিমান্ডও চাওয়া হয়েছে। আদালত বলেছেন, তাদের জামিন হয়েছে কী হয়নি, এটা তো অনলাইনেই দেখা যায়। এরপরও কেন আসামিদের পুলিশের কাস্টডিতে দেয়া হলো? কেন তাদের রিমান্ডে নেয়া হলো?’
তিনি বলেন, ‘ছিনতাই মামলায় সাতজন আসামিকে উচ্চ আদালত থেকে জামিন করাই। এই জামিন প্রাপ্তির পরও সাতজনের মধ্যে দুজনকে পুলিশ আটক করে নিয়ে নির্যাতন করে টাকা আদায় করে আদালতে সোপর্দ করেন। আদালত জামিনের তথ্য যাচাই-বাছাই না করে আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
‘এ ঘটনায় পত্রিকার প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে আমি আবার আদালতে উপস্থাপন করি। আদালত শুনানি নিয়ে বিচারকসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে তলব করেন।’
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়া কয়েকজন আসামি ও তাদের স্বজনদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে ৭২ লাখ টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়।