জামিনে থাকার পরও কলেজছাত্রকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমানের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ অভিব্যক্তি প্রকাশ করে।
পুলিশের দুই কর্মকর্তা সকালে আদালতে হাজির হন। এর আগেই তারা আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চান।
উপস্থিত দুই কর্মকর্তার উদ্দেশে হাইকোর্ট বলে, ‘আপনারা নিজেরা নিজেদেরকে মালিক মনে করেন। যে যেখানে বসেন, সেখানেই নিজেরা তাদেরকে মালিক মনে করেন। এই জন্যই কি দেশ স্বাধীন হয়েছে?’
আদালত আরও বলে, ‘আপনারা নিজেরা মালিক হয়ে গেছেন। মিটিংয়ে আছেন বলে ফোন কেটে দেন। মিটিং শেষ করেও কোনো পদক্ষেপ নেননি।
‘এ দেশটা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হয়েছে। জামিনের পরও আসামি ধরবেন…আপনারা কি নিজেদেরকে মালিক মনে করেন?’
বক্তব্য শেষে আদালত আগামী রোববার ফের শুনানি ও রায়ের জন্য দিন ঠিক করে।
আদালতে কলেজছাত্রের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা। দুই পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবু রেজা মো. কাইয়ুম খান ও শারমিনা হক। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
প্রেক্ষাপট
আগাম জামিনে থাকার পরও কলেজছাত্রকে গ্রেপ্তারের ঘটনা নজরে আনলে গত ২১ মে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেয়।
আদেশে পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মনিরুজ্জামান ও এএসআই মিজানুরকে তলব করা হয়।
জামিনে থাকার পরও উদ্দেশ্যমূলক গ্রেপ্তার করে দেশের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ জুন আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান পুলিশের দুই কর্মকর্তা।
গত ২০ মে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘জামিন নেওয়া শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
প্রতিবেদনটি ২১ মে আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওসি ও এএসআইকে তলব করে হাইকোর্ট।