চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে স্বল্প মূল্যের গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির আড়ালে গত তিন বছরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১৯টি প্রতিষ্ঠান কমপক্ষে ১৪৭ কোটি টাকা পাচার করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এসব প্রতিষ্ঠানের এই অর্থ পাচারের বিষয়টি সম্প্রতি নজরে আসে চট্টগ্রাম কাস্টমস গোয়েন্দাদের। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারে জড়িতদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বশির আহমেদ।
কাস্টমস গোয়েন্দা জানায়, গত তিন বছরের বিভিন্ন সময় ঢাকার ১৭টি ও চট্টগ্রামের ২টি প্রতিষ্ঠান কম মূল্যের পণ্য দেখিয়ে ৫ হাজার ৭৫৭ টন তৈরি পোশাক (টিশার্ট) দুবাইয়ে রপ্তানি করেছে। ৪২৪টি চালানে রপ্তানি করা এসব পণ্যের রপ্তানি অনুমতি ইস্যু ও শুল্কায়নের সময় সব মিলিয়ে মূল্য দেখানো হয়েছে ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ১১৬ ডলার।
প্রকৃতপক্ষে এসব পণ্যের মূল্য ছিল মোট ১৭২ লাখ ৭০ হাজার ২৮৬ ডলার। অর্থাৎ এসব পণ্য চালান রপ্তানির মাধ্যমে মোট ১৩৮ লাখ ৫৭ হাজার ১৭০ ডলার বিদেশে পাচার করা হয়েছে, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১৪৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার সমান।
অভিযুক্ত ১৯ প্রতিষ্ঠান হলো ঢাকার টোটাল কোয়ালিটি কোম্পানি, সেফ ফ্যাশন অ্যান্ড ট্রেডিং, জোবায়ের ট্রেডিং, মেঘনা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, এম আই ট্রেডিং, মারওয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, কে মুড টেক্সটাইল, তাহসিন ইন্টারন্যাশনাল, আল-ফাহাদ ট্রেড লাইন্স, এয়ার বাংলা, জিএস খান অ্যাপারেলস, ইমাজিন ফ্যাশন লি., মাস্টার ইন্টারন্যাশনাল, ফ্যাশন কমফোর্ট (বিডি) লি., এ আইফা এন্টারপ্রাইজ, ফাস্ট এক্সপোর্টস(বিডি) লি. এবং জেডইই ফ্যাশন এবং চট্টগ্রামের তাবাসসুম ইন্টারন্যাশনাল ও নাজাফ ট্রেডিং।
এরমধ্যে ৩৯ টি পণ্য চালানের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ৩০ কোটি ৫৪ লাখ ৭৮ হাজার ৩২২ টাকা পাচার করেছে ঢাকার এ আইফা এন্টারপ্রাইজ।
বিপুল এই অর্থ পাচারের বিষয়ে কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বশির আহমেদ বলেন, ‘আমরা পুরোনো নথিগুলো ঘাটতে গিয়ে সম্প্রতি বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। গত এক মাস ধরে আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। এই ধরনের অর্থ পাচার রুখতে শুল্কায়ন ও রপ্তানি অনুমতি ইস্যুর সময় আরও নজরদারি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’