চট্টগ্রামে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার দায়ে ৩২ বছর বয়সী মো. মহিউদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া তাকে তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
সে সঙ্গে হত্যায় জড়িত থাকার প্রমাণ না মেলায় মহিউদ্দিনের মা-বাবাকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত।
বুধবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-৭-এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় ঘোষণা করেন।
মো. মহিউদ্দিন ভুজপুর থানার বড় বেতুয়া গ্রামের আলম মাষ্টার বাড়ির বাসিন্দা। খালাস পাওয়া দুজন মহিউদ্দিনের বাবা মো. নুরু এবং মা জরিনা বেগম।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. কফিল উদ্দিন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার পাতাছড়া এলাকার আবু বক্কর ছিদ্দিকের মেয়ে সুমি আক্তারের সঙ্গে মহিউদ্দিনের বিয়ে হয়।
বিয়ের কিছুদিন পর থেকে সুমিকে এক লাখ টাকা যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন স্বামী। নির্যাতনের কথা সুমি তার পরিবারকে জানালে এ বিষয়ে পারিবারিকভাবে সালিশ বসে। বৈঠকে সুমিকে আর কখনও যৌতুকের জন্য নির্যাতন করা হবে না বলে ক্ষমা চান মহিউদ্দিন।
পরে ২০১৯ সালের ১৪ আগস্ট তিন মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা সুমি বমি করতে করতে মারা গেছেন বলে ফোন করে তার পরিবারকে জানানো হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পরে সুমির বাবা আবু বক্কর ছিদ্দিক বাদী হয়ে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-৭-এ মামলা করেন।
মামলায় নিহতের স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে আসামি করা হয়।
এ মামলায় পরের বছরের ২ ফেব্রুয়ারী আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। প্রতিবেদনে ময়নাতদন্তের ফলাফল অনুযায়ী ভোতা অস্ত্রের আঘাতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে সুমির মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এরপর ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারী আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি খন্দকার আরিফুল আলম বলেন, ‘বিচার শুরুর পর এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আটজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বুধবার আদালত মামলাটির রায় ঘোষণা করেন।’
রায় ঘোষণার সময় আসামি মহিউদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান বেঞ্চ সহকারী মো. কফিল উদ্দিন।