বগুড়ায় মঙ্গলবার সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক মাজেদুর রহমান জুয়েলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সাংবাদিকদের বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘গতকালের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় সরাসরি যারা আসামি এবং ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
এর আগে জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশা অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার রাত তিনটার দিকে নিজ নিজ বাসা থেকে হেনা ও জুয়েলকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল।
তিনি বলেন, ‘সাড়ে তিনটার দিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনাকে শহরের সূত্রাপুরের বাসা থেকে ডিবি পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। এর আগে রাত সোয়া ৩টার দিকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক মাজেদুর রহমান জুয়েলকে পুরান বগুড়ার বাড়ি থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়া হয়।’
জেলা বিএনপির সভাপতি আরও বলেন, ‘তাদের আটক করে কোথায় রাখা হয়েছে এখনও কিছু জানানো হয়নি। যদি মামলা হয় আইন অনুযায়ী গ্রেপ্তার করবে, তবে আটকের পরও স্বীকার না করা ভয়াবহ। তাদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শঙ্কা প্রকাশ করছি।’
এ বিষয়ে জানতে বগুড়া জেলা ডিবির ইনচার্জ মোস্তাফিজ হাসানকে ফোন করে পাওয়া যায়নি।
এদিকে বগুড়া সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ জানান, মঙ্গলবার দুপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় ১৯১ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর রাতেই পুলিশ একাধিক অভিযান চালায়। এতে কারা গ্রেপ্তার হয়েছেন, থানায় গিয়ে জানা যাবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে মঙ্গলবার বগুড়ায় বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি হয়।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের মাটিডালি বিমান মোড় ও বনানী মোড় থেকে আলাদাভাবে দুটি পদযাত্রা করে বিএনপি। মাটিডালি থেকে শুরু হওয়া পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও রেজাউল করিম বাদশা। আর বনানী মোড় এলাকা থেকে পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা।
বনানী থেকে আসা পদযাত্রা শহরের ইয়াকুবিয়া স্কুলের মোড়ে এলে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ একাধিক টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে।
সংঘর্ষে অন্তত ১০ পুলিশ সদস্য ও বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। এ ছাড়া পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেলের ধোঁয়ায় ইয়াকুবিয়া স্কুলের শতাধিক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে।