বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৪২ ঘণ্টায় সঠিকভাবে হয়নি হত্যা মামলার তদন্ত: পিবিআই

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ১৮ জুলাই, ২০২৩ ১৯:৪৬

হাইকোর্ট পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। এ জন্য অধিকতর তদন্ত করে আগামী ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে পিবিআইয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়।

৪২ ঘণ্টায় একটি হত্যা মামলার তদন্ত সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়নি বলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে উঠে এসেছে।

হাইকোর্টের নির্দেশে জমা দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে আসে।

বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চে মঙ্গলবার প্রতিবেদনটি জমা দেয়া হয়।

হাইকোর্ট এ প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। এ জন্য অধিকতর তদন্ত করে আগামী ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে পিবিআইয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।

পরে সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে পিবিআই তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। আদালত তখন পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে কিছু প্রশ্ন করে জবাব জানতে চান। তখন তদন্তকারী তার জবাব দেন।’

আদালত বলে, ‘মামলার আগের তদন্তকারী কর্মকর্তা আসলে কোথায় ছিলেন? একই সময়ে তিনি কি কোর্টে ছিলেন নাকি থানায় নাকি ঘটনাস্থলে?’

এ প্রশ্নের জবাব সন্তোষজনক মনে না হওয়ায় বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে ২৫ জুলাই সুনির্দিষ্ট করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয় আদালত। এর আগে সকালে পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খোদা তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন।

প্রতিবেদনে মামলার বিস্তারিত তুলে প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের এসআই মো. মাসুদুর রহমানের বিষয়ে বলা হয়, ‘মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মাসুদুর রহমান ২০০২ সালের ৩১ জানুয়ারি কনস্টেবল পদে চাকরিতে যোগদান করেন। তিনি ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর এসআই (নিরস্ত্র) পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়ে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটে যোগদান করেন। এরপর এখান থেকে বদলি হয়ে ২০২২ সালের ৯ আগস্ট মানিকগঞ্জ সদর থানায় যোগ দেন।

‘গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর হত্যা মামলাটি ছিল তার প্রথম তদন্ত। মামলাটি তদন্তে আইনের প্রাসঙ্গিক বিধানগুলি যথাযথভাবে অনুসরণ করেননি এবং তদন্ত কার্যক্রম সঠিকভাবে কেস ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করেননি মর্মে পিবিআই কর্তৃক অধিকতর তদন্তে প্রতীয়মান হয়েছে।

‘মামলাটি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে মাত্র ৪২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য উপস্থাপনের সময় এবং ঘটনাস্থলে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ধারায় সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ডের সময় একই দেখানো হয়েছে, যা বাস্তবসম্মত নয়।’

এরপর হাইকোর্ট প্রশ্ন তুলে বলে, ‘একই সময়ে এক ব্যক্তি কীভাবে তিন জায়গায় (আদালত, থানা, ঘটনাস্থল) থাকতে পারে?’

এটি সুস্পষ্ট করে অধিকতর তদন্ত করে জানাতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

এর আগে গত ৫ জুন এক আদেশে পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ মামলায় নতুন করে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী পিবিআই তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়।

হত্যার ঘটনায় মাত্র ৪২ ঘণ্টার মধ্যে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল থেকে শুরু করে ৯টি ধাপ পেরোনোর ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তলব করে গত ১৪ মার্চ আদেশ দেন হাইকোর্ট।

আদেশ অনুযায়ী ৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার এসআই মাসুদ রানাকে কেস ডকেটসহ হাজির হতে বলা হয়। এ আদেশের পাশাপাশি এ ঘটনায় রুলও জারি করে আদালত।

‘লাশ উদ্ধার থেকে অভিযোগপত্র, ৪২ ঘণ্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত’ শিরোনামে একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টে রিভিশন করেন মামলার বাদী।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মরদেহ রাত দেড়টায় উদ্ধারের পর সুরতহাল করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে। এরপর মামলা, আসামি গ্রেপ্তার, ঘটনাস্থল পরিদর্শন, মানচিত্র তৈরি, সাক্ষ্যগ্রহণসহ একে একে অন্তত ৯টি ধাপ পেরিয়ে হত্যা মামলার তদন্ত শেষ মাত্র ২২ ঘণ্টায়।

পরবর্তী ২০ ঘণ্টার মধ্যে আসামিকে আদালতে হাজির, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায়সহ তদন্তের সব প্রক্রিয়া শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। অর্থাৎ মরদেহ উদ্ধার থেকে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিতে পুলিশের সময় লেগেছে ৪২ ঘণ্টা।

এ বিভাগের আরো খবর