বগুড়ায় এক দফা দাবিতে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংষর্ষে জাড়িয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সংঘর্ষ ঠেকাতে একাধিক টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়তে হয়েছে পুলিশকে।
বগুড়া শহরের ইয়াকুবিয়া স্কুলের মোড়ে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশের ছয় সদস্য আহত হয়েছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষণা অনুযায়ী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের এক দফা দাবি বাস্তবায়নে বগুড়ায় পদযাত্রার আয়োজন করা হয়। এ লক্ষ্যে সকাল ১০টা থেকে বনানী থেকে মাটিডালী বিমান মোড় পর্যন্ত কর্মসূচি দেয় জেলা বিএনপি।
কর্মসূচি অনুযায়ী গাবতলী, শাহাজানপুর, ধুনট, শেরপুর ও শহর কয়েকটি ওয়ার্ডের বিএনপিসহ তাদের অঙ্গসংগঠন বনানী থেকে মিছিল নিয়ে সাতমাথার জেলা কার্যালয়ের দিকে রওনা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপির মিছিলটি ইয়াকুবিয়া মোড়ে এসে সোজা রাস্তা দিয়ে সাতমাথার দিকে যাচ্ছিল। ওই সময় মিছিলটিকে সাতমাথা হয়ে দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য বাধা দেয় পুলিশ। এ বাধাকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। মিছিলের পেছন থেকে লাঠিসোটা, ইট ছুড়তে থাকেন তারা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ তীব্র হলে টিয়ারশেল পরবর্তীতে রাবার বুলেট ছুড়ে পুলিশ। সংঘর্ষে পুলিশের অন্তত ছয় সদস্য আহত হন।
প্রায় আধা ঘণ্টা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার পর পুলিশ বিএনপির মিছিলটিকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তবে এর কিছুক্ষণ পরে শহরের নবাববাড়ী রোডে বিএনপির দলীয় কার্যালয় এলাকায় ইটপাটকেল ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এ ছাড়াও ককটেল বিস্ফোরণ হয়। সেখানেও পরিস্থিতি শান্ত করতে দুই রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে হয় পুলিশকে।
সংঘর্ষের ঘটনার পর বিএনপির কার্যালয়ে জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খান জাহাঙ্গীর বিবৃতি দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল নিয়ে সাতমাথার দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু ইয়াকুবিয়া মোড়ে পুলিশ বিনা কারণে আমাদের বাধা দেয়। আমাদের ওপর তারা হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অনেক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন, এজন্য সঠিক সংখ্যা আমরা জানতে পারিনি।’
ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়ে যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি ককটেল বিস্ফোরণের রাজনীতি করে না। ককটেল কারা ছুড়েছে আমরা জানি না। আর ওই হামলার পর আমাদের অনেক নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।’
হামলার দায় বিএনপির ওপর দিয়ে জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তার জন্য মোড়ে অবস্থান নিয়ে ছিলাম। বিএনপির মিছিলের সঙ্গে আমাদের কোনো কিছুই হয়নি। তারা অতর্কিত হামলা করে পুলিশের ওপর। এতে আমাদের অন্তত ছয়জন সদস্য আহত হয়েছেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েকটা টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করতে হয়।’