রংপুরের পীরগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হত্যার অভিযোগে এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সোমবার রাতে গাজীপুর থেকে মাসুদ মিয়া নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
শনিবার রংপুরের পীরগঞ্জের খালাশপীর এলাকায় আখক্ষেত থেকে অজ্ঞাতনামা নারী ও সদ্য প্রসূত কন্যা শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, গত ১০ বছর ধরে আশুলিয়ার একটি গার্মেন্টসে অপারেটর হিসেবে চাকরি করতেন মাসুদ। ২০২২ সালের ফ্রেরুয়ারি মাসে গার্মেন্টসে ভুক্তভোগী শান্তনা চাকরিতে যোগদান করেন।
একই কারখানায় চাকরির সুবাদে ভুক্তভোগীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে।
মাসুদ র্যাবকে জানান, শান্তনা ডিভোর্সি ছিলেন। প্রেম থেকে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। পরে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে আশুলিয়া এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন।
এক পর্যায়ে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হন। এতে তিনি মাসুদকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে ঝগড়া হয়। এতে শান্তনাকে ঢাকায় রেখে মাসুদ গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে চলে যান।
গত ১২ জুলাই শান্তনা মাসুদের সন্ধানে তার গ্রামের বাড়ি রংপুরে যান। সেখানে গিয়ে শান্তনা জানতে পারেন, মাসুদ বিবাহিত ও তার সন্তান আছে। সেখানে শান্তনা তার গর্ভজাত সন্তানের স্বীকৃতি এবং তাকে বিয়ে করার জন্য মাসুদকে চাপ দেন। তখন মাসুদের প্রথম স্ত্রী ফরিদা তা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান। এক পর্যায়ে মাসুদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য শান্তনাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন।
এ ছাড়া ঢাকায় গিয়ে ঘর ভাড়া নিয়ে আগের মতো বসবাস শুরু করবেন বলেও আশ্বস্ত করেন। ১৩ জুলাই মাসুদের খালা শান্তনাকে রংপুরের পীরগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে গাড়িতে উঠিয়ে দেন। ওই সময় মাসুদ শান্তনার সঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে গাড়ি থেকে নেমে তার বাড়িতে ফেরত আসার জন্য বলেন।
শান্তনা গাড়ি থেকে নেমে বাসস্ট্যান্ড থেকে মাসুদের বাড়িতে যাওয়ার পথে খালাশপীর নামক স্থানে মাসুদ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার কথা বলে কৌশলে শান্তনাকেও আখক্ষেতে নিয়ে যান।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সেখানে শান্তনাকে পেছন থেকে গলায় ওড়না প্যাচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এ সময় গলায় ও পেটে পা দিয়ে আঘাত করেন।
ফলে শান্তনার গর্ভজাত সন্তান ভুমিষ্ঠ হয় এবং উভয়েরই ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়।