আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘জনগণ ভোট দিলে সেই ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে, সেই প্রতিনিধি পার্লামেন্টে যাবে, পার্লামেন্টে গিয়ে আইন তৈরি করবে যে কীভাবে সরকার গঠন করবে। এজন্যই ত বলা হয় এটা গণতন্ত্র, এজন্যই বলা হয় পার্লামেন্টে নির্বাচন প্রয়োজন। এজন্য নির্বাচনকে গণতন্ত্রের মহান দরজা বলা হয়। সেই দরজাটা এরা (আওয়ামী লীগ) বন্ধ করে দিয়েছে। সেই নির্বাচন আর হয় না।’
রোববার চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউরী এলাকায় শ্রমিক দলের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ন্যাড়া একবারই বেলতলায় যায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষ আর নির্বাচনে ভোট দিতে যেতে চায় না৷ কারণ ভোট দিতে হয় না তো যাবে কেন, ভোট হয়? আবার বলা ওদের অধীনেই সুষ্ঠু ভোট হয়। মানুষ হাসবে না কাঁদবে? ভূতের মুখে রাম রাম। ন্যাড়া বার বার বেলগাছ তলায় যায়? আমরা কি বারবার এই নির্বাচনে যাব? মোটেই না।’
আওয়ামী লীগ বক ধার্মিক বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে বকধার্মিক। নদীর মধ্যে, চরের মধ্যে এক পা দিয়ে একদম চুপ করে বসে থাকে। মনে হয় যে এর মত ধার্মিক, এত ভালো পাখি আর কেউ নাই। যেই একটা মাছ নিচ দিয়ে যায়, গফ করে ধরে ফেলে। আওয়ামী লীগ হচ্ছে এই বক ধার্মিক। চুপ করে বসে আছে, আবার নতুন ভান করতেছে, ক্ষমতার চেয়ারে টুপ করে বসার জন্য।
‘ওই যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান, সেটা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ে করেছিলেন এদেশের মানুষের ভোটের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য৷ সেদিন নতুন সংসদ গঠন করে, সেই সংসদে সারারাত ধরে সেশন করে আমরা সবাই সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান করেছিলাম। কেন, যদি নির্বাচনের সময় নির্দলীয় কোনো সরকার থাকে, যে কোনো দল করে না, তখন জনগণ নিজের ইচ্ছায় ভোটটা দিতে পারবে। ভোটের পর সাধারণ মানুষ কি ৫ বছর ধরে সরকার চালায়? ওরা একটা দিন হচ্ছে এদেশের মালিক। সেটা হচ্ছে নির্বাচনের দিন।
আওয়ামী লীগ কৌশলে বিএনপিকে নির্বাচনে নিতে চায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এরা আবার আমাদের নির্বাচনে নিতে চায়। বুঝাতে চায় সারা দুনিয়াকে দেখো আমি কত ভালো হয়ে গেছি৷ কিছুদিন আগে যে বিদেশিরা আসছিলো, সেই বিদেশিদের দেখায়, দেখো আমি কত ভালো, আমরা বিরোধীদলকে সভা করতে দিই, মিটিং করতে দিই, তাদের বাধা দিই না। যে-ই সময় আসে, টপ করে ধরে ফেলবে।
‘আজ আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলছেন, মাফিয়া হটাও। মাফিয়া তারা, যারা বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় থাকেন আর শুধু লুটপাট করেন। আওয়ামী লীগ পরিকল্পনা করছে, কীভাবে আবার ক্ষমতায় আসা যায়। তারা প্রশাসনে রদবদল করছে। মন্ত্রীর পিএস এবং এপিএসদের ডিসি (জেলা প্রশাসক) বানাচ্ছে। তারা নির্বাচনের সময় রিটার্নিং অফিসার হবেন। এছাড়া ইউএনও বানানো হচ্ছে আওয়ামী লীগের পছন্দের লোকদের।’
নির্বাচন কমিশন কথা অনুযায়ী কাজ করেনা দাবি করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সবসময় সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে। তারা বলে নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানো হবে। কিন্তু বাস্তবে তারা এটি করে না।