কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমে গেলেও কমেনি ভোগান্তি। এলাকার ৬৫০ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। নিমজ্জিত হয়ে রয়েছে দেড় হাজার হেক্টর ফসলি জমি।
শনিবার বিকেলের দিকে দুধকুমার নদীর পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানা যায়।
অপরদিকে ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ২১ সেমি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি থাকায় মাঠের ফসল নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে স্থানীয় কৃষকরা। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, বন্যার কারণে মাঠে অবস্থিত ফসলের মধ্যে ১ হাজার ৪৮৭ হেক্টর ফসল নিমজ্জিত হয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলার মৎস কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, বন্যায় এখন পর্যন্ত ৬৫০টি পুকুরের ১৩০ টন মাছ ভেসে গেছে।
জেলা শিক্ষা অফিসার শামসুল আলম জানান, বন্যার কারণে ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন অফিস থেকে সরবরাহকৃত তথ্যে জানা গেছে, চলতি বন্যায় ৪৫টি ইউনিয়নের ১৮৫টি গ্রাম সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বন্যা কবলিত হয়েছে ৬১ হাজার ৪৫জন মানুষ। জেলার ৩৬১টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ২১টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৮০টি পরিবারের ৩শ’জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত ২২ হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্রের বাইরেও কুড়িগ্রামের বন্যাকবলিত অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন খোলা আকাশের নিচে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজলার ভােগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের কাছে স্যুইচ গেটের পাশে রাস্তায় পলিথিনের নীচ আশ্রয় নেয়া সালেহা আকুতি জানায়, ‘সাতদিন থাকি ঘরের টুই ছুঁই ছুঁই বানের পানি। রাস্তার উপর এক পলিথিনের নীচ দুই পরিবার আছি কষ্ট করি। ইলিপ চাইনা বাবা। সরকারকে কন হামার ঘরবাড়ি উচা করি দেউক যাতে আর বানের পানি ঘরত না ওঠে। তাইল হামরা খুশি।’
ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চর মাধবপুর গ্রামের ২৮টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে ধরলা নদীর পূর্ব প্রান্তে রাস্তার পাশে পলিথিন টাঙ্গিয়ে।