কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে জমিতে গাছ লাগনোকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের জেরে ভাই ও বোনকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান এসপি মোহাম্মদ রাসেল শেখ।
গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক, যে সম্পর্কে নিহত দুজনের চাচাত ভাই।
বাকি তিনজন হলেন নিহত দুই সহোদরের চাচি ৪১ বছর বয়সী ফরিদা খাতুন, চাচাত ভাই ২৬ বছর বয়সী ইমরান ও ১৮ বছর বয়সী আরমান। তারা সবাই হোসেনপুর উপজেলার শাহেদল ইউনিয়নের উত্তর কুড়িমারা পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা।
ইমরানকে লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ, আরমান ও তার ছোট ভাইকে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ এবং তাদের মা ফরিদা খাতুনকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার সকালে শামসুল ইসলামের ৩০ বছর বয়সী ছেলে মাহমুদুল হাসান আলমগীর ও ২১ বছর বয়সী মেয়ে নাদিরা আক্তারকে কুপিয়ে হত্যা করেন তারই ভাই আবদুল কাদির ও তার ছেলেরা।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি রাসেল শেখ জানান, বিরোধপূর্ণ জমিতে চারাগাছ রোপণ ও কাটাকে কেন্দ্র করে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে।বৃহস্পতিবার সকালে আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মো. শামসুল ইসলামের বাড়ির সামনে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। তখন শামসুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা গালিগালাজের প্রতিবাদ করায় আসামি ইমরান হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে শামসুল ইসলাম ও তার বড় ছেলে মাহমুদুল হাসান আলমগীর, মেজো ছেলে হুমায়ুন কবীর, ছোট ছেলে সালমান, মেয়ে নাদিরা ও স্ত্রী শাহিদাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারতে শুরু করেন।
আসামিদের অস্ত্রের আঘাতে মাহমুদুল হাসান আলমগীর ঘটনাস্থলেই নিহত হন। গুরুতর আহত হুমায়ুন কবীর, সালমান, নাদিরা ও তাদের মা শাহিদাকে উদ্ধার করে প্রথমে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পরে ওই দিনই ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় নাদিরার। গুরুতর আহত অন্যাদের ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এসপি জানান, খুনের ঘটনার আলামত হিসেবে রক্তমাখা একটি জিন্সের ফুল প্যান্ট, একটি খয়েরি রঙের ফুলহাতা শার্ট, একটি কুড়াল, একটি কোদাল, একটি লোহার খুন্তি, একটি রক্তমাখা কাঠের হাতল যুক্ত দা, একটি পলিথিন ব্যাগের ভেতরে রক্তমাখা মাটি, একটি রক্তমাখা খয়েরি রঙের টি-শার্ট, একটি গাঢ় নেভি ব্লু রঙের ফুল প্যান্ট ও একটি সাত ইঞ্চি লম্বা ধারালো সুইচ গিয়ার উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য তিন আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।