রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এফডিসি রেলগেট এলাকায় ট্রেন আটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন রেলওয়ের অস্থায়ী শ্রমিকরা। এতে সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার রেল যোগাযোগ তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে।
রোববার সকালে রাজধানীর বিএফডিসি রেলগেট এলাকায় রেললাইনের উপর বাংলাদেশ রেলওয়ে অস্থায়ী শ্রমিকদের ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এসময় তিতাস কমিউটার ট্রেন আটকে দেয় তারা।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার বলেন, ‘রোববার সকাল দশটা ১০ মিনিট থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমরা স্টেশন এলাকায় আছি তাই ওখানের খবরটা বলতে পারছি না। শ্রমিকরা লাইন ছেড়ে দিলেই আবার সব ট্রেন চলাচল শুরু হবে।’
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪টি ট্রেন ঢাকা স্টেশন ছাড়তে পারেনি। অন্যদিকে ৫টি ট্রেন ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা রেলওয়ে শ্রমিকরা জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ গত ১ জুলাই তাদের জানিয়ে দিয়েছেন, জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে তাদের চাকরি থাকছে না। আগামী দুই মাস জুলাই এবং আগস্ট তাদের বিনা বেতনে চাকরি করতে হবে। বিনা বেতনে চাকরি করলে যেন থাকেন আর না করলে যেন চলে যান-এমন নির্দেশনা দিয়েছে রেলওয়ে ডিআরএম।
বাদ না দিয়ে অভিজ্ঞদের কাজে লাগানোর দাবি জানিয়ে শ্রমিক মো. এমরান বলেন, ‘আজকে আমার চাকরির বয়স সাত বছর। আমরা এখানে অভিজ্ঞ। অথচ আমাদেরকে বাদ দিয়ে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ দেয়া হবে। আমাদের এখানে একেক জনের কাজের বয়স ৫ থেকে ১০-১২ বছর পর্যন্ত। এতদিন আমরা রেলওয়েতে সার্ভিস দিলাম, কিন্তু রেলওয়ে আমাদের মূল্যায়নই করল না।’
গেটম্যান হীরা বলেন, ‘আমরা বারবার রেল ভবনে এই বিষয়ে স্মারক লিপি দিয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমাদেরকে বাদ দিয়ে তারা ঠিকাদারের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগের ব্যবস্থা করেছে। আমরা চাই আমাদের চাকরিটা ফেরত দেয়া হোক। কারণ এই মুহূর্তে আমাদের আর অন্য কোনো চাকরি করার বয়স নাই। এতদিন রেলওয়ের সঙ্গে থেকে শেষ বয়সে এসে না খেয়ে মরব, সেটা তো হতে পারে না।’
আন্দোলনকারী শ্রমিকদের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ রেলওয়ের জনবল সংকট নতুন কথা নয়। জনবল পূরণে শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি শূন্য পদের বিপরীতে এতোদিন অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে আসছিল। কিন্তু বর্তমানে আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লোক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। যার ফলে অস্থায়ী শ্রমিকরা আউটসোর্সিং প্রক্রিয়া বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অস্থায়ী কর্মরত শ্রমিকদের পদগুলো হচ্ছে মেকানিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং (গেট কিপার, ওয়েম্যান, লোকো খালাসি, ক্যারেজ খালাসি) সিগন্যালিং ইলেকট্রিক্যাল ও ট্রান্সপোর্টেশন (গেট কিপার, পোর্টার, পয়েন্টসম্যান) ইত্যাদি।