বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিএনপি মিছিল ও সভা-সমাবেশ করলেও হরতাল-অবরোধ দেয়নি। সরকারের পতন হবে গণঅভ্যুত্থানে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সরকারের সব দপ্তর দখল করে নেব।’
শুক্রবার বিকেলে নোয়াখালী জেলা শহরের শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম মাঠে পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে সবাইকে বোকা বানিয়ে বিচারপতি খায়রুল হকের ওপর ভর করে পার্লামেন্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে দেয়। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকলে, নিরপেক্ষ সরকার থাকলে, নির্দলীয় সরকার থাকলে আওয়ামী লীগের ভাত নেই। ত্রিশটি আসনও পেত না তারা।’
আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা বলে নির্বাচন আমাদের অধীনে হবে। আমরাই ভোট কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করব। আমাদের মতো করে সবাইকে ভোট দিতে হবে। নইলে চলে যেতে হবে। এমনকি আমাদের ভোটারদের তারা এখনও বলে- ভোট কাকে দিবা? যদি বিএনপিকে ভোট দিতে চাও তাহলে তোমার ভোট হয়ে গেছে। ভোটারকে ভোট কেন্দ্রে যাইতেই দেয় না।’
শুক্রবার নোয়াখালী জেলা শহরের শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে পদযাত্রা কর্মসূচির আগে সমাবেশে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। ছবি: নিউজবাংলা
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “২০২১ সালে শেখ হাসিনা আমাদের ডেকে বলেন- ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে, সবাই ভোট করতে পারবেন। সবাইকে বলেন, ভোট করতে আমি কোনো বাধা দেব না।’ “আমরা ভাবলাম বোধ হয় শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে। কী আর করা যাবে বলেন। ভূতের মুখে রাম রাম। আগের রাতে ভোট হয়ে গেল। এখন আমার বলছে- ‘আমরা সুন্দর ভোট করব। আমাদের অধীনেই ভোট হবে। ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন হবে।’
“আহারে! কী আবদার। শিয়ালের কাছে বার বার কুমিরের বাচ্চা দেয়া যাবে না। বার বারই খেয়ে ফেলবে। আমরা এবার আর খেতে দেবো না।”
আওয়ামী লীগকে হুশিয়ারি দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের সময় শেষ। আমি পরিষ্কারভাবে বলেছি। আবারও বলছি- ভালো ছেলের মতো, সুবোধ বালক-বালিকার মতো পদত্যাগ করুন, সংসদ ভেঙে দিন। ভালোয় ভালোয় পদত্যাগ করেন তো ভালো। তা না হলে ফয়সালা হবে রাজপথে।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ৮ বছর কারাগারে রাখা হয়েছে। তিনি গণতন্ত্রের জন্য আপোষহীন সংগ্রাম করেছেন। আমরা নির্বাচিত হলে রাষ্ট্র মেরামতের জন্য ৩১ দফা দিয়েছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান এই ৩১ দফা দিয়ে আমাদের একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন।’
পদযাত্রায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু ও মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান প্রমুখ।
শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত পদযাত্রায় সকাল থেকে নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা জেলা থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমবেত হয়। সমাবেশ শেষে পদযাত্রাটি বেগমগঞ্জ উপজেলার দিকে অগ্রসর হয়।