টানা দু’দিন সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে বাস চলাচল বন্ধ রাখার পর এবার পুরো সিলেটে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন। এর ফলে বুধবার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলাটিতে বাস-মিনিবাসসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে।
সিলেট-তামাবিল সড়কে নির্বিঘ্নে বাস চলাচল এবং জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কামাল আহমেদকে গ্রেপ্তারের দাবিতে এ কর্মবিরতির ডাক দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘দুই দাবিতে দু’দিন ধরে সিলেট-তামাবিল সড়কে আমাদের কর্মবিরতি চলছে। কিন্তু আমাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় বুধবার ভোর থেকে পুরো সিলেট জেলায় পরিবহন শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে সব পরিবহন সংগঠন। তাই বুধবার থেকে সিলেটের কোনো রাস্তায় কোনো ধরনের গাড়ি চলবে না।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুক্রবার (৭ জুলাই) রাতে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত এলাকায় বাস ও ইজিবাইকের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহত্তর জৈন্তার ১৭ পরগণার সালিশ সমন্বয় কমিটির ডাকা সভায় সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন বাসচালকদের ছাঁটাই ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধের দাবি জানানো হয়।
শনিবার জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদের নেতৃত্বে স্থানীয় কয়েকজন মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে চলাচলকারী বাসের চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করেন। এসময় লাইসেন্সবিহীন চালকদের গাড়ি আটকে দেন তারা।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদকে গ্রেপ্তারের দাবিতে রোববার রাতে সিলেট-তামাবিল সড়কে ধর্মঘটের ডাক দেয় সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন। সোমবার সকালে এই ধর্মঘট শুরু হয়। এতে দু’দিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সড়কটিতে চলাচলকারী যাত্রীরা। দু’দিন ধর্মঘট পালনের পর এবার পুরো জেলায় পরিবহন চলাচল বন্ধের ডাক দেয়া হয়েছে।
এদিকে সোমবার রাতে ফের বৈঠক করে বৃহত্তর জৈন্তাপুর ১৭ পরগনা সালিশ কমিটি। এতে তিনটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সেগুলো হচ্ছে- ১৭ পরগনার কাছে জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম ও বাস মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। ক্ষমা চাওয়ার আগ পর্যন্ত উত্তর সিলেটে তামাবিল, সিলেট-কানাইঘাট, সিলেট-গোয়াইনঘাট সড়কে বাস চলাচল করতে দেয়া হবে না।
মালিক সমিতি নিজেই গাড়ি বন্ধ করেছে। তাই ক্ষমা চাওয়ার পর পুনরায় বাস চালাতে চাইলে ১৭ পরগনার অনুমতি নিয়েই বাস চালাতে হবে।
বাস ব্যতীত সব গাড়ি চলাচল করবে। এতে কেউ বাধা দিলে ১৭ পরগনার আপামর জনতা তা প্রতিহত করবে।
এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, ‘সোমবার ১৭ পরগনার বৈঠকে তিনটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার পুনরায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।’