ছাত্রদলের মিছিল প্রতিহত করতে এসে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে ছাত্রলীগের দুপক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এতে ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ছাত্রলীগের জেলা কমিটি ও পদবঞ্চিত গ্রুপের সদস্যরা পাল্টাপাল্টি মিছিল ও সমাবেশ করেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাসে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে আনুমানিক ১০০ জন নেতা-কর্মী মিছিল করেন। পরে বটতলায় তাদের সমাবেশ হয়।
একই সময়ে পদবঞ্চিতদের একটি দল পাশে অবস্থান নিয়ে পাল্টা স্লোগান দিতে থাকেন। দলটির একাধিক সদস্যের হাতে লোহার পাইপ, রড, স্ট্যাম্প ছিল। তারা জেলা কমিটিকে কলেজ থেকে চলে যাওয়ার দাবি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কয়েক দফায় বাকবিতণ্ডা করেন। পরে দুপুর ১টার দিকে জেলা কমিটির নেতা-কর্মীরা চলে যান। এরপর পদবঞ্চিতরাও মিছিল করে ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে যান।
জেলা ছাত্রদল সূত্র জানায়, তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আজিজুল হক কলেজে মিছিলের উদ্যোগ নেয় মাহমুদুল নামে তাদের এক ছাত্রনেতা। কিন্তু সকালে কলেজে এসে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর অবস্থা দেখে তারা মিছিল না করেই ফিরে যান।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দীকি বলেন, ‘এটা কোনো কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছিল না। জেলা সংগঠন থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়। সরকারি শাহ সুলতান কলেজেও মিছিল করা হয়। তবে আজিজুল হক কলেজে ছাত্রলীগের দুপক্ষের ঝামেলা দেখে সেখানে কর্মসূচি পালন সম্ভব হয়নি।’
পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ পক্ষের মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো কলেজের ছাত্রলীগের দলীয় স্ট্যান্ডে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসেছিলাম। নতুন যে কমিটি, এটা অযোগ্য কমিটি। তারা শিবগঞ্জে কমিটি দিয়েছে। যারা নাশকতা মামলায় জড়িত তাদের পদ দিয়েছে। সারিয়াকান্দি কমিটিতে বিবাহিতদের রেখেছেন। যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের দিয়ে কমিটি করেছেন তারা।’
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব সাহা বলেন, ‘ছাত্রদলের একটি দল কলেজে প্রবেশের চেষ্টা করছে, এমন একটি সংবাদ ছিল। তারা শিক্ষার পরিবেশ যেন নষ্ট করতে না পারে, এ জন্য আমরা অবস্থান নিয়েছিলাম।’
ছাত্রলীগের আরেক পক্ষের অবস্থান নিয়ে জেলার সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সর্ববৃহৎ একটি সংগঠন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনেক নেতা-কর্মী থাকবে, এটাই বাস্তবতা।’
২০২২ সালের ৭ নভেম্বর রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সজিব সাহাকে সভাপতি ও আল মাহিদুল ইসলাম জয়কে সাধারণ সম্পাদক করে ৩০ সদস্যের বগুড়া জেলা শাখার আংশিক কমিটি ঘোষণা করে।
এ ঘোষণার ঘণ্টাখানেক পরই কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিক্ষোভ করেন সংগঠনটির কিছু সংখ্যক নেতা-কর্মী। তখন থেকেই বগুড়ায় ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ তৈরি হয়।
বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘পুলিশ ছাত্রদলের কোনো মিছিল বা তাদের উপস্থিতি পায়নি। কলেজে ছাত্রলীগের দুপক্ষের অবস্থানের খবরে আমরা উপস্থিত হই। কলেজে শিক্ষার পরিবেশ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ তৎপর ছিল। কোনো ঝামেলা হয়নি।’