জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আরোপিত ১৫ কোটি টাকার বেশি দানকরকে বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে (লিভ টু আপিল) নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আবেদনের ওপর আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ১৭ জুলাই দিন ঠিক করা হয়েছে।
রোববার আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত এ দিন ঠিক করে দেয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে গত ২১ জুন লিভ টু আপিল করেন ড. ইউনূস। সেই আবেদনের শুনানির জন্য আবেদনটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
মামলা থেকে জানা যায়, ১৯৯০ সালের দানকর আইন অনুযায়ী ২০১১-২০১২ কর বর্ষে মোট ৬১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দানের বিপরীতে প্রায় ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা কর দাবি করে নোটিশ পাঠায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
২০১২-২০১৩ করবর্ষে ৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা দানের বিপরীতে ১ কোটি ৬০ লাখ ২১ হাজার টাকা দানকর দাবি করা হয়। আর ২০১৩-২০১৪ করবর্ষে ৭ কোটি ৬৫ হাজার টাকা দানের বিপরীতে ১ কোটি ৫০ লাখ ২১ হাজার টাকা কর দাবি করে নোটিশ দেয় এনবিআর।
দানের বিপরীতে কর দাবি করে এনবিআরের এসব নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ড. ইউনূস। তার দাবি, আইন অনুযায়ী দানের বিপরীতে এনবিআর এ কর দাবি করতে পারে না।
এরপর ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর তার আবেদন খারিজ করেন আপিল ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০১৫ সালে তিনি (ড. ইউনূস) হাইকোর্টে তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলা করেন।
ওই মামলাগুলোর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে দানকর দাবির নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত করে ২০১৫ সালে রুল জারি করে হাইকোর্ট।
ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে মৃত ও পরিবারের সদস্যদের কল্যাণ চিন্তা করে নিজের নামে প্রতিষ্ঠিত তিনটি ট্রাস্টে যে টাকা দান করেছেন, সেই দানের বিপরীতে এনবিআরের আরোপ করা দানকর বৈধ ঘোষণা করে গত ৩১ মে রায় দেয় হাইকোর্ট।
রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন প্রতিষ্ঠানে ৭৭ কোটি টাকা দান করেছিলেন। তিনি বলছেন এর বিপরীতে কর দিতে হবে না। আমরা বলেছি দিতে হবে এ কারণে এনবিআর তাকে নোটিশ দিয়েছিল। পরে তিনি হাইকোর্টে তিনটি রেফারেন্স মামলা করেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, হাইকোর্ট রেফারেন্সগুলো ঠিক বলেছে। আবেদনগুলো খারিজ করে দিয়েছে। এখন এনবিআরের দাবি করাা কর দিতে হবে। এনবিআর ১৫ কোটি টাকার অধিক দাবি করেছিল। ইতোমধ্যে তিনি ৩ কোটি টাকার মতো দিয়েছেন। এখন বাকি ১২ কোটি টাকার অধিক কর পরিশোধ করতে হবে।