জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের সার্ভার কোনো থ্রেটের (হুমকি) ভেতরে নেই দাবি করে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম হুমায়ুন কবীর বলেছেন, ‘আমাদের এখান থেকে তথ্য ফাঁস হয়নি।’
রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন দাবি করেন।
বাংলাদেশের সরকারি একটি ওয়েবসাইট থেকে কয়েক লাখ নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি ওয়েবসাইট। ৬ জুলাই তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদ মাধ্যম টেকক্রাঞ্চের ওই খবরে বলা হয়েছে, ফাঁস হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের তথ্যের মধ্যে নাম, ফোন নম্বর, ইমেইল ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর রয়েছে।
এদিকে সার্ভার থেকে বিপুল সংখ্যক জন্ম ও মৃত্যুর নিবন্ধন তথ্য গায়েব হওয়ার বিষয়ে অনুসন্ধান প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করেছে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ।রোববার বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান এ প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এনআইডি ডিজি এ কে এম হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘ওয়েবসাইটের সঙ্গে এনআইডির কোনো সম্পর্ক নেই। এনআইডি একটা পৃথক সাইট। ১৭১টি প্রতিষ্ঠান আলাদা আলাদাভাবে কানেক্টেড। কোটি কোটি ডাটা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
হাইকোর্টের নির্দেশ হাতে পেলে সেই মোতাবেক কাজ করবেন উল্লেখ করে এনআইডি ডিজি বলেন, ‘মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। আমরা আমাদের সাইটে অ্যাবনর্মাল হিট পায়নি। আমাদের সার্ভার পাবলিক প্রপার্টি নয় এটা নিজস্ব সম্পদ। এখানে কেউ কিছু লিখতে পারে না।’
ওয়াসা ও বিদ্যুৎ বিলের প্রসঙ্গ টেনে হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘ওদের পোর্টাল অরক্ষিত থাকলে কিছু তথ্য লিক হতে পারে। এমন কিছু হয়েছে কি না ক্ষতিয়ে দেখছি। এখন পর্যন্ত আমাদের ডাটা সেন্টার ও ম্যানেজমেন্টে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। যাদের সঙ্গে কাজ করছি তারাই থার্ড পার্টি তাদের মাধ্যমে তথ্য ফাঁস হয়নি।
‘আমার কাছে অ্যাবনর্মাল হিট হয়নি। আমরা বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখবো। আমাদের এখান থেকে তথ্য ফাঁস হয়নি। পার্টনার সাইড অডিট করবো। আইসিটি বিশেষজ্ঞ দিয়ে তদন্ত কমিটি করাবো। এর পর ব্যবস্থা নেবো।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সার্ভার সুরক্ষিত রয়েছে। তারপরও সার্ভারের অধিকতর সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আইসিটি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া হবে।’
ইসির এনআইডি সিস্টেম ম্যানেজার মো. আশরাফ হোসেন বলেন, আমাদের এনআইডি ডাটাবেজ অনেকগুলো পার্টনারের সঙ্গে কানেক্টেড। তাই সিকিউরিটি লিক করার চান্স থাকে। কারণ তাদের সার্ভার থেকে তথ্যটা নিচ্ছে। আমাদের এনআইডি সার্ভারের থ্রেড নাই।
তিনি বলেন, এনআইডি সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। নিয়মিত মনিটরিং করি কী পরিমাণ হিট আসছে। ১৭১টা পার্টনার সার্ভিস সিকিউরভাবে কাজ করছে। নিউজ দেখার পর আমরা এই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছি। এখানে একটা সাইট দুর্বল পাওয়া গেছে। মাথা ব্যাথা হলে কাটবো না। এটা সমাধান করবো যাতে করে নাগরিক সেবা ঝুঁকিপূর্ণ না হয়।
বাংলাদেশে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রত্যেক নাগরিককে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র দেয় সরকার। ইসিতে ভোটারদের ছবি, আঙুলের ছাপসহ অন্তত ৪০টির তথ্য সম্বলিত তথ্যভাণ্ডার সংরক্ষিত রয়েছে। নানা ধরনের নাগরিক সেবা দিতে অর্ধ শতাধিক সংস্থার সঙ্গে ইসির চুক্তি অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট কয়েকটি তথ্যের ‘ভেরিফিকেশন সার্ভিস’ চালু রয়েছে।