চিকিৎসায় বিলম্বের কারণে ঝালকাঠি কারাগারের এক হাজতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রফিকুল ইসলাম বিপ্লব নামের ওই ব্যক্তি আদালতে বিচারাধীন একটি ডাকাতি মামলায় এ বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে ছিলেন।
৪৭ বছর বয়সী রফিকুল ইসলাম ফরিদপুরেরর ভাঙ্গা উপজেলার মৌলবীডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা।
শনিবার সকাল ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। গণমাধ্যমকে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠি কারাগারের জেলার মো. আখতার হোসেন শেখ।
তবে দ্রুত বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে রোগীকে সিসিইউ সাপোর্ট দেয়া যেত বলে জানিয়েছেন ঝালকাঠি কারাগারে থাকা অনেকেই। আবার ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ফেলে রেখে তার চিকিৎসায় গাফিলতি হয়েছে বলেও অনেকে এ প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।
ঝালকাঠি কারা কর্তৃপক্ষ জনায়, শনিবার সকাল ৭টার দিকে বুকে ব্যাথার কথা জানালে বিপ্লবকে কারাগারের ভেতরে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে হার্ট অ্যাটাক সন্দেহে কারাগারে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. হাবিবুর রহমান তাকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল নয়টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
হার্ট অ্যাটাকের রোগীকে কেন এক ঘণ্টা ধরে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রেখে দেয়া হলো- জানতে চাইলে চিকিৎসকরা বলেন, ‘কারাগার থেকে আনা রোগীকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল। কিন্তু তাকে নেয়া হয়নি।’
ঝালকাঠি কারাগরের জেলার আখতার হোসেন শেখ বলেন, ‘উন্নত চিকিৎসার জন্য (সিসিইউ সাপোর্ট) বরিশাল নিতে হলে কারা বিভাগের অফিশিয়াল আদেশ-সংক্রান্ত কিছু প্রস্তুতি নিতে হয়। সেই প্রক্রিয়া চলাকালীন রোগীর মৃত্যু হয়।’
কারা চিকিৎসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সদর হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানকার চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। তবে ঝালকাঠিতে করোনারী কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) না থাকায় তাকে সাপোর্ট দেয়া সম্ভব হয়নি।’
তবে তিনিও রোগীকে বরিশাল নেয়ার প্রস্তুতি চলছিল বলে জানান।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, ‘অসুস্থ অবস্থায় এক আসামিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে কারা কর্তৃপক্ষ। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।’
তবে কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে, তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া বলা যাবে না বলে জানান ডা. দ্বীন মোহাম্মদ।
মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে জেল সুপার মিলন চাকমা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিকেল ৪টায় ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু এখনও নিহতের স্বজনরা ফরিদপুর থেকে ঝালকাঠি এসে পৌঁছায়নি। তারা আসলে তাদের কাছে মহদেহ দিয়ে দেয়া হবে।’