বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে বলে কথা!

  • প্রতিনিধি, গাইবান্ধা    
  • ৮ জুলাই, ২০২৩ ১৬:৩৭

গাইবান্ধা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।’

ঢাকায় রুম ভাড়া নিয়ে থাকার সময়ের টাকার হিসাব চাওয়ায় রুমমেটকে দলবল নিয়ে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে গাইবান্ধা সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ সারোয়ার কবীরের ছেলে শাহ্ ছিরাতী মাজহাব ওরফে অরণ্যের বিরুদ্ধে।

রুমমেট জাহিদ পারভেজ জনি চৌধুরীকে ধরে নিয়ে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে দুই ঘণ্টা ধরে অন্তত ১১ জন মিলে নির্যাতন চালায়। ২৯ জুন রাত ৯টার দিকে শহরের দাস বেকারি মোড় এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত পারভেজ গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে তিন দিন ভর্তি থেকে চিকিৎসা শেষে বর্তমানে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। একই ঘটনার জের ধরে এ নিয়ে পারভেজের ওপর দুই দফা হামলা হলো।

এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে চেয়ারম্যানের ছেলে অরণ্যকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪ থেকে ৫ জনের নামে সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগে সদর থানায় মামলা হয়েছে। মামলার অন্য অভিযুক্তরা হলেন একই এলাকার সুজন মিয়া, আসিফ মিয়া, জীবন, সাগর মিয়া ও জুয়েল।

আহত পারভেজ গাইবান্ধা ডেভিড কোম্পানীপাড়ার প্রয়াত আব্দুল হালিম চৌধুরীর ছেলে। চেয়ারম্যানের ছেলে অরণ্য ও পারভেজ একে অপরের রুমমেট। তারা ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে দেড় বছর ধরে একসঙ্গে থাকতেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, হামলার শিকার পারভেজ ও শাহ্ ছিরাতী মাজহাব ওরফে অরণ্য ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি রুম ভাড়া নিয়ে থাকতেন। ওই রুমে আবির নামে আরও এক রুমমেট থাকতেন।

১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে রুমের ভাড়ার গত কয়েক মাসের হিসাবে গরমিল পাওয়া যায়। পরে অরণ্যের কাছে হিসাব জানতে চান পারভেজ। এতেই ক্ষিপ্ত হন অরণ্য। ‘শা.. তোর এতো বড় সাহস যে, তুই আমার কাছে হিসাব চাস’ এবং ওই মূহুর্তেই বাসা ছেড়ে দিতে হুমকি দেন অরণ্য।

এমন আচরণের প্রতিবাদ করায় তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে অরণ্য টিপ ছুরি দিয়ে পারভেজের বুকে আঘাত করার চেষ্টা করেন। এসময় পারভেজ আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে তার হাতের কবজি ও আঙ্গুলের অনেকটা অংশ কেটে যায়। পরে মোবাইল ফোনে রুমমেট আবির ও পরিচিত এক বড় ভাই শাহরিয়ারকে ডেকে নিয়ে তাদের সহায়তায় এভার কেয়ার হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসা নেন। পরদিন তাদের পরামর্শে শেরে-ই-বাংলা নগর, ঢাকা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) এ ভর্তি হন পারভেজ। এ ঘটনার পর ওই বাসাও (রুম) ছেড়ে দেন তিনি।

একই ঘটনার জেরে ওই সময়েই অভিযুক্ত অরণ্য পারভেজের মোটরসাইকেল জব্দ করেন। পরবর্তীতে বাইকটি চাইতে গেলে অরণ্য ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে পারভেজ বাড়িতে এসে বিষয়টি পারিবারিকভাবেও আপোষ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন এবং ২০ মে ঢাকার ভাটারা থানায় অরণ্যের নামে মামলা করলে উদ্ধার হয় পারভেজের বাইক।

পরবর্তীতে ঈদুল আযহার ছুটিতে বাড়ি আসেন পারভেজ। সেই ঘটনার জেরে ২৯ জুন রাত ৯টার দিকে দ্বিতীয় দফায় অরণ্য দলবল নিয়ে শহরের দাস বেকারি মোড়ে পারভেজের পথরোধ করেন। এ সময় অরণ্যসহ সুজন, আসিফ, জীবন, সাগর ও জুয়েল দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন পারভেজকে। পরে পারভেজকে টেনে-হিঁচড়ে নেয়া হয় ডেভিড কোম্পানীপাড়া এক নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে। সেখানে দুই ঘণ্টা আটকে রেখে চালানো হয় নির্যাতন।

মারধরের এক পর্যায়ে পারভেজ রুমের মেঝেতে পড়ে গেলে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টাও চালান অভিযুক্তরা। পরে ঘটনার শোরগোলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা আহত পারভেজকে আবারও টেনে-হিঁচড়ে অরণ্যের (উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ সারোয়ার কবীরের) বাড়িতে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্বজনরা স্থানীয়দের সহায়তায় রাত ১১টার দিকে ওই বাড়ি থেকে পারভেজকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ঘটনার পর ১ জুলাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পারভেজ তার ভাগ্নির মাধ্যমে গাইবান্ধা সদর থানায় মামলা করলেও তদন্তের নামে মামলা রুজু করতে কিছুটা সময় নেয় পুলিশ। পরে ৭ জুলাই রাতে মামলা নেয়া হয়।

সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান অভিযুক্ত অরণ্যের বাবা সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ সারোয়ার কবীর বলেন, ‘মামলার বিষয়টি আমি জানি না।

‘মামলা যদি হয়, হতে পারে। তার জন্য আইন আছে, আদালত আছে, অসুবিধা নেই। তারা বন্ধুবান্ধব এক সাথেই থাকত। হয়তো ধস্তাধস্তির মতো কোনো কিছু করেছে।’

এ বিভাগের আরো খবর