রাজধানীর উত্তরখানে ৮০ বছরের বৃদ্ধ হাজেরা খাতুন হত্যার ঘটনায় আরব আলী নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিগারেট ও জুতার সূত্র ধরে এই হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ভাড়া নিয়ে দ্বন্ধে ভাড়াটিয়া আরব বাড়ির মালিক হাজেরা খাতুনকে হত্যা করে বলে জানিয়েছেন
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মূলত ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বে ভাড়াটিয়া আরব আলী বাড়ির মালিক হাজেরা খাতুনকে হত্যা করেন।
উত্তরখানের মাস্টারপাড়ার ওজাপাড়া ৮২/৩ নম্বর বাড়ির উত্তর পাশের একটি কক্ষে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মঙ্গলবার খবর পায় পুলিশ। রাত ৮টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় নিহত বৃদ্ধার মেয়ে নাজমুন নাহার বীনা বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় মঙ্গলবার রাতেই হত্যা মামলা করেন।
ডিসি মোর্শেদ আলম বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে উদ্ধার করা সিগারেটের অংশবিশেষ, আসামির ব্যবহৃত জুতা ও ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করা হয়।
‘আলামতের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে আরব আলীর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে কুমিল্লার বুড়িচং এলাকা থেকে বুধবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে তাকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পাঠানো হয়।’
ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘হাজেরা বেগম বাড়ির উত্তর পাশের একটি কক্ষে একা বসবাস করতেন। আর দক্ষিণ পাশের চারটি কক্ষ তিনি ভাড়া দেন। কিছুদিন আগে ভাড়া সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে হাজেরা বেগমের সঙ্গে ভাড়াটিয়া নাসিমা বেগম ও আরব আলীর মনোমালিন্য এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।’
তিনি জানান, ৩ জুলাই হাজেরা বেগমকে তার মেয়ে একাধিকবার ফোন করেও পাননি। পরদিন বেলা ২টার দিকে মামাতো ভাই রবিন মামলার বাদীকে ফোন করে জানান যে হাজেরা বেগমের কক্ষ বাইরের দিক থেকে তালাবদ্ধ। জানালা দিয়ে মেঝেতে শোয়া অবস্থায় তাকে দেখা যায়।
পরে বাদীর মামা আবুল হোসেন ও তার মামাতো ভাই রবিনসহ আশপাশের লোকজন কক্ষের তালা ভেঙে মেঝে থেকে রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেন। সে সময় কক্ষের বিছানার ওপর মালামাল এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল।
মামলার অভিযোগে বীনা বলেন, ‘পূর্বশত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে আমার মায়ের মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে থেঁতলিয়ে হত্যা করে বাইরে থেকে দরোজা তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায় খুনি।’