জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আন্দোলন সরকার নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের মধ্য ধাতুয়াকান্দার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রাব্বানী হত্যা মামলায় এর আগে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি নয়ন সরকারের স্বীকারোক্তিমতে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন আন্দোলন সরকার। এর ভিত্তিতেই বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি ওই এলাকার মৃত ইমান আলী সরকারের ছেলে।
বকশীগঞ্জ থানার ওসি সোহেল রানা জানান, সাংবাদিক নাদিম হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া নয়ন সরকারকে মঙ্গলবার আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। জিজ্ঞাসাবাদে নয়ন জানান, নাদিম হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন আন্দোলন সরকার। এরপর ওইদিন রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ধাতুয়াকান্দায় নিজ বাড়ি থেকে আন্দোলনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার সকালে তাকে ডিবি পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম ১৪ জুন রাতে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে পৌর শহরের সরকারি কিয়ামত উল্লাহ কলেজ মোড়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। প্রথমে তাকে বকশীগঞ্জ হাসপাতালে ও পরে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে মারা যান নাদিম।
এ ঘটনায় নিহত নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামি করে নামীয় ২২ জন ও অজ্ঞাতনামা আরো ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যার ঘটনায় সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামিসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে পুলিশ রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে মাহমুদুল আলম বাবু, মনিরুজ্জামান মনির ও রেজাউল হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
তবে নামীয় ২২ আসামির মধ্যে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন মাত্র ৫ জন। সবশেষ আন্দোলন সরকারসহ এই হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৪ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সাংবাদিক নাদিম বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর জেলা প্রতিনিধি ও একাত্তর টিভির বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে বকশীগঞ্জ পৌর শহরে পশ্চিমপাড়া এলাকায় বসবাস করতেন।