তথ্যমন্ত্রী ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘দেশের মালিক জনগণ। রাষ্ট্র ক্ষমতায় কারা যাবে সেটি নির্ধারণ করার মালিক হচ্ছে জনগণ। বিএনপির যদি কোনো নালিশ থাকে তা দিতে হবে জনগণের কাছে, বিদেশিদের কাছে নয়।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধিদের কাছে ‘দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়’ বলে বিএনপির মহাসচিব যে অভিযোগ দিয়েছেন, তার জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জার্মানি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়ামসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে, যুক্তরাজ্যে যেভাবে নির্বাচন হয়, সেখানে যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তারাই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে। আমাদের দেশেও ঠিক একইভাবে নির্বাচন হবে।’
বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে একথা বলেন তিনি।
এর আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) প্রকাশিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি: সংবাদপত্রে প্রতিফলন’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন মন্ত্রী।
পিআইবি’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, পরিচালক আবুল কালাম মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, গ্রন্থকার গবেষক পপি দেবী থাপা প্রমুখ মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের আগমন তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হওয়ার বার্তাই বহন করে জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এই আগমনকে আমরা স্বাগত জানাই।’
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা প্রায়ই দেশে আসছেন এবং চলতি মাসে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দলের আসার কথা রয়েছে- এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কর্মকর্তা এসেছেন এবং সহসাই আরও কয়েকজন আসবেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। তাদের সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা-সংক্রান্ত সম্পর্ক রয়েছে এবং বিশ্বাঙ্গনেও বহুমাত্রিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা কাজ করি। বাংলাদেশের উন্নয়নেও যুক্তরাষ্ট্র বিরাট ভূমিকা রাখছে।’
তিনি বলেন, ‘নালিশ তারা করতে পারে কিন্তু আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো নালিশ জনগণের কাছে করার জন্য, বিদেশিদের হাতে-পায়ে না ধরার জন্য।’
বিএনপির সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন চট্টগ্রাম থেকে শুরু হবে- ঘোষণার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামে নিহত হয়েছিলেন। চট্টগ্রাম খুব তাৎপর্যপূর্ণ। তারা তো মাঝে-মধ্যেই এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা দেন। আন্দোলন চট্টগ্রামেই মারা যায় কি না, সেটিই দেখার বিষয়।’
ভূ-রাজনীতির কোনো চাপ সরকারের ওপরে আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার কোনো চাপে নেই। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে বিএনপি আন্দোলনের নামে যে সহিংসতা করেছে, সেটি আমরা সামাল দিয়েছি। সেটি করার সামর্থ্য বিএনপির এখন নেই এবং ভূ-রাজনীতির কারণে আর এ ধরণের আন্দোলন করা বরং তাদের পক্ষে সম্ভবপর নয়। আমরা জানি কখন কী করতে হবে।’
ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপি সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলো বর্জন করে তাদের দলীয় কর্মী-সমর্থকদের এবং জনগণকেও বর্জন করার, ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। তাদের এত প্রচারণার মধ্যেও ৫০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। সুতরাং আগামী নির্বাচনেও জনগণ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্রের মূল বিষয় হচ্ছে জনগণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে কি না। নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ আমরা অবশ্যই স্বাগত জানাই। তবে তারা যদি নাও আসে, আগামী নির্বাচনে জনগণ থাকবে।’