দীর্ঘদিন ধরে অনেকটা গোপনে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী। তবে নির্বাচনের আগ মূহূর্তে এসে আবার প্রকাশ্যে মাঠে নামার আভাস দিয়েছে দলটি। এর অংশ হিসেবে ১৫ জুলাই সিলেটে সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো সংগঠনটি।
১০ দফা দাবিতে সিলেট রেজিস্টারি মাঠে এই সমাবেশ আয়োজনের অনুমতি চেয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কাছে আবেদন করেছে সিলেট মহানগর জামায়াত। এর আগে দীর্ঘদিন পর গত মাসে ঢাকায় প্রথম প্রকাশ্যে সমাবেশ করে জামায়াত।
সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মো. শাহজাহান আলীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বুধবার বিকেলে আবেদনপত্রটি এসএমপিতে জমা দিয়েছে।
প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন- সিলেট মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আব্দুর রব, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট জামিল আহমদ রাজু, সিলেট বারের সিনিয়র আইনজীবী আজিম উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট আব্দুল খালিক।
জামায়াতের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- কেয়ারটেকার সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও আলেম-ওলামার মুক্তিসহ দশ দফা দাবিতে ১৫ জুলাই শনিবার বেলা ২টায় সিলেটে রেজিস্টারি মাঠে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জামায়াত সিলেট মহানগরীর উদ্যোগে ওই কর্মসূচি আমরা সুশৃংখল ও শান্তিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করতে চাই। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি সম্পন্ন করতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর শাখার সেক্রেটারি মো. শাহজাহান আলী বলেন, ‘সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ছিলেন না। আমরা অন্য একজন কর্মকর্তার কাছে আবেদনপত্র জমা দিয়েছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন কমিশনার এলে তারা বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাবেন। আমরা আশা করছি তারা আমাদের সমাবেশের অনুমতি দেবেন। আমরা শান্তিপূর্ণ একটি সমাবেশ করতে চাই।’
তবে জামায়াতের সমাবেশের আবেদনের বিষয়ে এখনও কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার ইলিয়াছ শরীফ।
সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতির মাঠে কোণঠাসা জামায়াত। বিভিন্ন ইস্যুতে ঝটিকা মিছিল ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে তেমন কোনো কার্যক্রম নেই দলটির। এসব ঝটিকা মিছিলেও পুলিশের বাধা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি ঢাকায় সমাবেশ করে দীর্ঘদিন পর প্রকাশ্যে আসে জামায়াত। নির্বাচনের আগে জামায়াতের এই প্রকাশ্যে আসা নিয়ে রাজনীতিতে নানামুখী আলোচনা রয়েছে। সরকারের সঙ্গে জামায়াতের আঁতাতের অভিযোগও করা হচ্ছে বিএনপির পক্ষ থেকে।