আপিলে ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থীতা ফিরে পেয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর যে বিশ্বাস ফিরে পেয়েছিলেন, তা আবারও হারিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম।
নির্বাচনী প্রচারে নেমে মহাখালীর সাততলা বস্তিতে হামলার শিকার হন হিরো আলম। এ বিষয়ে বুধবার নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনিস্টিউটে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ জানিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ দাবি করেন তিনি।
হিরো আলম বলেন, ‘আজকেই যদি এমন পরিস্থিতি হয় তাহলে ভোটের দিন ডাইরেক্ট বলবে নৌকা ছাড়া কোনো ভোট হবে না। ডাইরেক্ট নৌকায় সিল মারবে। আজকে ভোটারদের কাছেই পৌঁছাতে দিল না। ভোটের দিন আমাকে ভোট দিতে দেবে- এই বিশ্বাস হারায়ে গেছে।’
তবে প্রার্থীতা ফিরে পাওয়ার দিন তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের ইসির ওপর যে মানুষের ভুল ধারণা আছে, আস্তে আস্তে এগুলা দুর হয়ে যাবে। মানুষের ইসির ওপর আস্থা আসবে। সেই হিসেবে জনগণ সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা করবে। যেই রকম আজকে আমি এখানে সুষ্ঠু বিচার পেয়েছি।’
সাততলা বস্তিতে প্রচারে গিয়েছিলাম জানিয়ে হিরো আলম দাবি করেন, “সেখানে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মী বস্তির গেইটে দাঁড়িয়ে বলল, ‘এখানে তোমরা ঢুকতে পারবে না। আরাফাত (নৌকার প্রার্থী) ভাইয়ের ভোট করব (প্রচার চালাবো)।’ এরপর আমরা যখন ঢুকতে চাচ্ছি তখন মহিলারা আমাদের গায়ে হাত তুললো। একজন এখন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। তারা ইট মেরেছে, জুতো মেরেছে, গায়ে হাত তুলেছে। তারা বুঝাচ্ছে যে নৌকা ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেবে না।”
তিনি বলেন, ‘রিটার্নিং অফিসারকে বলেছি, আমরা জানের নিরাপত্তা দেখতেছিনা। আমি না হয় আমার জানের মায়া করলাম না। কিন্তু আজকে আমার একটা কর্মী হাসপাতালে। আমি তো চাই না- হিরো আলমের জন্য কোনো মায়ের বুক খালি হোক।
‘আপনারা জানেন, এই নির্বাচন নির্বাচন করে কত মায়ের বুক খালি হয়েছে শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার আশায়। কিন্তু তারা ক্ষমতায় ঠিকই আছে, কিন্তু মা তার সন্তানকে ফিরে পায়নি। এর রকম ঘটনা যদি হয়, আমার কর্মী যদি মারা যায়, তাহলে কী হবে?’
হিরো আলমের অভিযোগের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা লিখিত পেয়েছি। কর্তৃপক্ষকে দেব। তারা যা নির্দেশনা দেবেন তাই হবে।
‘মৌখিকভাবে তিনি বলেছেন যে, প্রচার চালাতে দেয়নি; আঘাতও করেছে। আচরণবিধি ভঙ্গ হয়েছে কি না আমরা সেটা দেখব। অভিযোগ তো মাত্র পেলাম। তদন্ত করব, তারপর ব্যবস্থা নেব।’
হিরো আলম ফোন করে তাকে পাননি- এমন অভিযোগের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে ছিলাম। আরো দুটো নম্বর দেয়া আছে, সেখানে ফোন দিতে পারবেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন সব ব্যবস্থা আমরা নেব।’
এ বছরের ১৫ মে চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যু হলে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়।
তফসিল অনুযায়ী ভোটগ্রহণ হবে ১৭ জুলাই। এ দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যালট পেপারে ভোট নেয়া হবে৷ পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা দিয়ে ভোটকেন্দ্রের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে।