কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এক প্রবাসীর ঘুমন্ত স্ত্রী ও পুত্রকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহতের ঘরে পাওয়া কালো রঙের একটি টুপির সূত্র ধরে অপরাধীকে শনাক্ত করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
চৌদ্দগ্রাম সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার গভীর রাতে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার পাঁচড়া বেপারী বাড়িতে এই জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন নিপা আক্তার ও তার আট বছর বয়সী সন্তান আলী আহসান মুজাহিদ।
নিপা আক্তারের স্বামী আনোয়ার হোসেন দুবাই প্রবাসী। হত্যাকাণ্ডের পর একটি কালো টুপির সূত্র ধরে অপরাধীকে শনাক্ত করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ নিপার ভাসুরের দুই ছেলেকে আটক করেছে।
নিহত নিপার বাবা জালাল আহমেদ বলেন, ‘আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে তার ভাই মীর হোসেনের সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধের জের ধরে মীর হোসেনের ছেলে আবদুল্লাহ আল শাহেদ এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত ৯টায় নিপা ওর ছেলে আলী আহসান মুজাহিদকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী মামাশ্বশুর আজিজুল ইসলামের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এই সুযোগে হত্যাকারী ঘরের ভেতর ঢুকে নির্মাণাধীন টয়েলেটে লুকিয়ে ছিল।
‘রাতে ঘরে ফিরে নিপা ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে লাকড়ি দিয়ে পিটিয়ে ওদের গুরুতর জখম করে। এ সময় নিপা ও তার ছেলের চিৎকার শুনে লোকজন এসে মা ও ছেলেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিপাকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় নেয়ার পথে মুজাহিদও মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ওদের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।’
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনা ঘটিয়ে অপরাধী শাহেদ পালিয়ে গেলেও পরে পুলিশ তাকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। নিহতদের বাড়ির একটি কক্ষ থেকে কালো রঙের একটি টুপি উদ্ধার করা হয়। ওই টুপির সূত্র ধরেই অপরাধীকে শনাক্ত করা হয়েছে।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, অপরাধী স্বীকার করেছে যে সে কোথায় কিভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। সে একটি বড় কাঠের টুকরো দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় মা-ছেলের মাথা ও মুখে আঘাত করে। এই আঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান নিপা। পরে তার শিশু সন্তানটিও মারা যায়।
তিনি বলেন, ‘এই জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আনোয়ার হোসেনের ভাই মীর হোসেনের দুই ছেলে ২২ বছর বয়সী মঈনুল হাসান শুভ ও ১৮ বছর বয়সী আবদুল্লাহ শাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো সম্ভব নয়।